সোমালিয়ার সোমালিল্যান্ড অঞ্চলকে শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের’ স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল।
১৯৯১ সালে সোমালিয়া থেকে স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে সোমালিল্যান্ডের কোনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না। খবর আনাদোলুর।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার সোমালিল্যান্ডকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরই ইসরায়েলের ওই বেআইনি পদক্ষেপকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে সোমালিয়ার ফেডারেল সরকার।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে সোমালিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করা হয়েছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাদের সংবিধান, জাতিসংঘের সনদ এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের সংবিধান অনুয়ায়ী সোমালিয়ার ওই অঞ্চলের "সার্বভৌমত্ব, জাতীয় ঐক্য এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি নিরঙ্কুশ এবং অ-আলোচনাযোগ্য" বিষয় হিসেবে পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সোমালিয়ার ফেডারেল সরকার তার সার্বভৌমত্বের ওপর ইচ্ছাকৃত আক্রমণ এবং সোমালিয়ার উত্তরাঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইসরায়েলের বেআইনি পদক্ষেপকে স্পষ্টভাবে এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, সোমালিল্যান্ড অঞ্চল সোমালিয়ার সার্বভৌম ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য, অবিচ্ছেদ্য এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ।
উল্লেখ্য, সোমালিল্যান্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের’ স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। এই স্বীকৃতি দেওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তরের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আজ (শুক্রবার) সোমালিল্যান্ড প্রজাতন্ত্রকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে সোমালিল্যান্ডকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দেশ হলো ইসরায়েল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই ঘোষণা আব্রাহাম চুক্তির চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইসরায়েল ও কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একাধিক চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়।
সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আবদিরাহমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহি এই স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি একটি ‘কৌশলগত অংশীদারত্বের’ সূচনা।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সোমালিল্যান্ড প্রজাতন্ত্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দিতে সোমালিল্যান্ডের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করছি।
১৯৯১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করা সোমালিল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে। গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহির কাছে এটি ছিল অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার।
পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সার বলেছেন, দুই দেশ ‘পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক’ স্থাপনে সম্মত হয়েছে, যার আওতায় রাষ্ট্রদূত নিয়োগ এবং দূতাবাস খোলা হবে।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে আমি আমার মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছি।
নেতানিয়াহুর দপ্তর বলেছে, প্রধানমন্ত্রী সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহিকে ইসরায়েল সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট এই ঐতিহাসিক ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সোমালিয়ার সরকার ফিলিস্তিনি অধিকারের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, সোমালিয়া “দৃঢ়ভাবে দখল, জোরপূর্বক নাগরিকদের স্থানচ্যুতি,এবং অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ প্রত্যাখ্যান করে। সোমালিয়া কখনই ফিলিস্তিনি জনগণকে রাষ্ট্রহীন করা মেনে নেবে না বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
বিদেশী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিরুদ্ধেও সতর্ক করে সোমালিয়া বলেছে, ইসরায়েলের এ পদক্ষেপ “প্রক্সি সংঘাতে টেনে আনতে পারে যা তেলআবিবের আঞ্চলিক সংঙ্ঘাত আফ্রিকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
-এমএমএস

