ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গা বিভাগে একটি স্লিপার বাসে ট্রাকের ধাক্কায় আগুন লেগে জীবিত অবস্থায় পুড়ে ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৮ জন।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ২টার দিকে জাতীয় মহাসড়ক-৪৮ এ একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খায় বেসরকারি মালিকানাধীন একটি বিলাশবহুল বাস। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের শীবামোগ্গার দিকে যাচ্ছিল। পথে রিয়ুরের কাছে এই সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনার তীব্র শব্দে তাদের ঘুম ভেঙে যায়। সেই সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সংঘর্ষের ফলে বাসের জ্বালানি ট্যাংকে ফুটো হয়ে তেল ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে পুরো বাসে আগুন ধরে যায়। সেই সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন ফলে অনেকে বের হতে পারেননি। কয়েকজন যাত্রী একে অপরকে টেনে বের করতে সক্ষম হলেও দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের কারণে অনেককেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এতে ঘটনাস্থলেই আটজন বাস যাত্রী এবং ট্রাকচালকের মৃত্যু হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধার কাজ শুরু করে।
পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল রবিকান্ত গোদা বলেছেন, ‘একটি লরি ট্রাক সড়ক বিভাজকের ওপর থেকে উড়ে এসে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। প্রাথমিক তদন্ত নির্দেশ করছে, ট্রাকটি বাসের ফুয়েল ট্যাংকে ধাক্কা মেরেছে। এরফলে বাসে আগুন লেগে যায়। বাসের কিছু যাত্রী আগুন থেকে বেরিয়ে যেতে সমর্থ হন। কিন্তু অনেকে আটকা পড়েন। এ ঘটনায় আট বাসযাত্রী এবং ট্রাক চালকের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার বেঁচে ফেরা যাত্রী আদিত্য ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, সংঘর্ষের পরপরই চারদিকে মানুষের আর্তনাদ শুরু হয়ে যায়। আগুনের লেলিহান শিখা এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল যে বাসের মূল দরজাটি খোলা সম্ভব হয়নি। প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া যাত্রীরা জানালার কাচ ভেঙে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করেন।
দুর্ঘটনা কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এই মর্মান্তিক ঘটনাকে ‘হৃদয়বিদারক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ২ লাখ এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএইচআর

