মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ভাঙল ব্যারিকেড-পুলিশের লাঠিচার্জ

কলকাতাতেও বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে উগ্র-হিন্দুত্ববাদী দলের বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

কলকাতাতেও বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে উগ্র-হিন্দুত্ববাদী দলের বিক্ষোভ

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের পর এবার কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এসময় বিক্ষোভকরীরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়। 

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এভিবিপি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ-সহ সঙ্ঘ পরিবারের একাধিক সংগঠনের ডাকে বাংলাদেশের উপদূতাবাস এলাকায় জড়ো হন শত শত বিক্ষোভকারী। বাংলাদেশের ময়মনসিংহে তরুণ হিন্দু শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা এবং মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানায় তারা। তবে বাংলাদেশের উপদূতাবাসের সামনে পৌঁছোনোর আগেই বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয় পুলিশ।


বিজ্ঞাপন


পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আটকাতেই রণক্ষেত্রে চেহারা নেয় বেকবাগান এলাকা। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। জমায়েত ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। পরে বিক্ষোভকারীদের অনেককে টেনেহিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। অনেক বিক্ষোভকারীকে দেখা যায়, প্রিজন ভ্যানের ছাদের ওপর উঠে পড়তেও।

image

এদিকে বেকবাগান উতপ্ত হয়ে ওঠায় বিজেপি নেতৃত্বও ঘটনাস্থলে পৌঁছোন। ঘটনাস্থলে যান উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ। তার দাবি, পুলিশের লাঠি চালানোর প্রতিবাদ জানাতে এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর পাশে দাঁড়াতে গিয়েছেন তারা।

এরআগে কলকাতার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন রাখতে দেবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান শুভেন্দু অধিকারী।


বিজ্ঞাপন


গতকাল সোমবার বাংলাদেশের ময়মনসিংহে হিন্দু যুবক দীপু দাস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ করে হিন্দুত্ববাদী বেশ কয়েকটি  সংগঠন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে বাংলাদেশের উপদূতাবাসে একটি স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। তবে পুলিশি বাধায় দূতাবাসের কাছে পৌঁছাতে পারেনি, এতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীও রাস্তায় বসে পড়েছিলেন। 

এ সময় তিনি ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘দীপুকে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ হাইকমিশনকে এখানে থাকতে দেব না। তাদের এটি তালাবদ্ধ করতে হবে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর সীমান্তে এক ঘণ্টার প্রতীকি অবরোধ হবে এবং ২৬ ডিসেম্বর আমরা আবারও এখনো জড়ো হবো।’

এদিকে নয়াদিল্লির চানক্যপুরীতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশন অভিমুখে বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী দল। এসময় বিক্ষুব্ধরা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় এবং ‘বাংলাদেশ মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দিতে কুশপুত্তলিকা পোড়ায়। 

India
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন অভিমুখে বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী দল।

মঙ্গলবার এই বিক্ষোভ শুরু করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও বাজরং দলসহ হিন্দু সংগঠনগুলো। তবে বিক্ষোভকারীদের হাইকমিশন ভবন থেকে ৫০০ মিটার দূরে আটকে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ঘটনাস্থলে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী কয়েক স্তরের ব্যারিকেড, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

গত শনি ও রোববার (২০ ও ২১ ডিসেম্বর) দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পরপর দুদিনই হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রায় দুই শতাধিক দুষ্কৃতিকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বাংলাদেশবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা সংঘবদ্ধভাবে হাইকমিশনে হামলা চালায়।

দুই দফা হামলার জেরে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে দেওয়া সব ধরনের সেবা ও ভিসা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ধরনের সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

সূত্র: আনন্দবাজার, বিবিসি

এমএইচআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর