কৃষ্ণ সাগরের নৌঘাঁটিতে নোঙর করা একটি রাশিয়ার সাবমেরিনকে সামুদ্রিক ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এ হামলায় সাবমেরিনটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা (এসবিইউ)। তবে মস্কো এ দাবি অস্বীকার করে বলেছে হামলায় কোনও ক্ষতি হয়নি।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এসবিইউ বলেছে, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের তৈরি ‘সাব সি বেবি’ ড্রোন কৃষ্ণ সাগরের নভোরোসিয়স্ক বন্দরে অবস্থারত সাবমেরিনটিতে আঘাত হানে, যেখানে রাশিয়া তার অনেক নৌযানকে ইউক্রেনীয় হামলার নাগালের বাইরে রাখার জন্য নোঙর করেছে।
এসবিইউ কর্তৃক প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, যেখানে একটি সাবমেরিন এবং অন্যান্য জাহাজ নোঙর করা হয়েছিল তার কাছাকাছি পানির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। বন্দরের লেআউট এবং স্তম্ভ ব্যবহার করে ভিডিওটির অবস্থান নিশ্চিত করেছে রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা আলেকজান্ডার কামিশিন এক্স-এ লিখেছেন, ‘ইতিহাসে এটি প্রথমবারের মতো যে একটি ডুবোজাহাজ ড্রোন একটি সাবমেরিনকে নিষ্ক্রিয় করেছে, রাশিয়ার কৃষ্ণ সাগর নৌবহর কয়েক ঘন্টা পরে এই দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ইউক্রেনীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্রো প্লেটেনচুক রয়টার্সকে বলেন, হামলায় সাবমেরিনটির যে ক্ষতি হয়েছে রাশিয়ার পক্ষে তা মেরামত করা কঠিন হবে। কারণ এটি পানির ওপরে তুলেই মেরামতের কাজ করতে হবে, যার অর্থ টি আবার আক্রমণের মুখোমুখি হবে।
এসবিইউ জানিয়েছে, সাবমেরিনটিতে চারটি কালিবার ক্রুজ মিসাইল লঞ্চার রয়েছে, এসব লঞ্চার দিয়ে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে হামলা চালানো হতো।
এই সাবমেরিনটি কমপক্ষে চারটি ক্যালিব্র-টাইপ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম, যা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে হামলা চালাতে ব্যবগার হয়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ গ্রিড লক্ষ্য করে মারাত্মক হামলা জন্য এই ক্যালিব্র-টাইপ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রুশ বাহিনী।
প্রসঙ্গত, প্রায় চার বছরের যুদ্ধের পর ইউক্রেনের কার্যত কোনও নৌবহর অবশিষ্ট নেই, তারা কৃষ্ণ সাগর এবং অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বন্দর শহর সেভাস্তোপলে অবস্থানরত রাশিয়ার বৃহৎ নৌবহরকে আক্রমণ করতে সমুদ্র ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এদিকে ইউক্রেনের এ দাবি নিয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি রাশিয়া। তবে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলি জানিয়েছে, কৃষ্ণ সাগর নৌবহরের কোনও জাহাজ বা সাবমেরিন অথবা তাদের ক্রুরা, ইউক্রেনের নাশকতার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং স্বাভাবিকভাবেই দায়িত্ব পালন করছে।
সূত্র: রয়টার্স
এমএইচআর

