ফুটবল তারকা লিওনেল মেসির ১৩ ডিসেম্বর কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়াম সফর ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার ঘটনায় রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছেন। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যায় ভারতের একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। পরে তাঁকে ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজ্যের ক্রীড়া দপ্তরের দায়িত্ব নিজেই দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজ্ঞাপন
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মেসির কলকাতা সফরের সময় যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে, তার জন্য ইতিমধ্যেই আপনি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আমি ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাই।” তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন মঞ্জুর করার অনুরোধ জানান।
জানা যায়, এই ঘটনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি সংক্রান্ত বৈঠকেও তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য ও শীর্ষ আধিকারিকদের সামনে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে ভিভিআইপি উপস্থিতি থাকা কর্মসূচিতে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকের পরই অরূপ বিশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেন বলে জানা গেছে। চিঠি পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, ‘গোট গ্রেটেস্ট অফ অল টাইম ট্যুর’-এর অংশ হিসেবে মেসির এই সফর ছিল মাত্র ২২ মিনিটের। নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি ভার্চুয়ালি নিজের ৭০ ফুট মূর্তির উদ্বোধন করেন। পরে সল্টলেক স্টেডিয়ামে পৌঁছন, যেখানে বিপুল সংখ্যক দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ, ক্ষুব্ধ দর্শকরা পুলিশের দিকে জলের বোতল ছোড়েন এবং আগুন লাগানোরও চেষ্টা করেন। স্টেডিয়ামের গোলপোস্টের জাল ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং গ্যালারির চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
এই ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। তিনি অবসরপ্রাপ্ত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অশিম কুমার রায়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি মেসি ও ফুটবলপ্রেমীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
মেসির পশ্চিমবঙ্গ সফরের আয়োজক শতদ্রু দত্তকে শনিবার গ্রেফতার করা হয়। রোববার আদালত তাঁকে দু’সপ্তাহের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। এদিকে, এই ঘটনার দায় নিয়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে।

