পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকা পুনর্বিবেচনার সময় কারও নাম বাদ গেলে রাজ্যের নারীরা যেন রান্নাঘরের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকেন, সেই নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নদিয়ার কৃষ্ণনগরে এক সমাবেশে মমতা বলেছেন, ‘মা-বোনদের অধিকার তোমরা এসআইআরের নামে ছিনিয়ে নেবে? ভোটের সময় দিল্লি থেকে পুলিশ এনে মা-বোনদের ভয় দেখাবে? মা-বোনরা, যদি তোমাদের নাম কেটে দেয়, তোমাদের তো সরঞ্জাম আছে, তাই না? যেগুলো তোমরা রান্না করার সময় ব্যবহার করো। শক্তি তো আছে, তাই না? নাম কেটে দিলে কি তোমরা ছাড়বে? নারীরাই সামনে থেকে লড়বে, আর পুরুষরা থাকবে পেছনে।’’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, নারীরা নাকি বিজেপি শক্তিশালী—এটা তিনি দেখতে চান? আমি সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি না, আমি বিশ্বাস করি ধর্মনিরপেক্ষতায়। নির্বাচন এলেই বিজেপি অর্থ খরচ করে, বাইরে থেকে মানুষ এনে বিভাজন ছড়ানোর চেষ্টা করে।
গত রোববার কলকাতায় আয়োজিত গণ ভগবত গীতা পাঠ কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা বাড়িতে প্রয়োজন হলে গীতা পাঠ করি। তা বলে সভা করার কী প্রয়োজন? ঈশ্বর থাকেন অন্তরে। যারা আল্লাহকে ডাকেন, তারাও হৃদয় থেকে ডাকেন। রমজান হোক কিংবা দুর্গাপূজা; আমরা একসঙ্গে প্রার্থনা করি। যারা গীতার কথা বলে চিৎকার করছে, আমি জানতে চাই, শ্রীকৃষ্ণ কী বলেছিলেন? ধর্ম মানে পবিত্রতা, মানবতা, শান্তি—সহিংসতা, বৈষম্য আর বিভাজন নয়।’
রামকৃষ্ণ পরমহংস, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো মহাপুরুষেরা মানুষকে কখনো বিভক্ত করেননি। তাহলে তোমরা কে?; প্রশ্ন রাখেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা।
গীতা পাঠ কর্মসূচির সময় ব্রিগেডে প্যাটিস বিক্রেতাদের মারধরের ঘটনায় বিজেপিকে তোপ দেগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্যাটিস বিক্রেতাদের মারধর করা হয়েছে। কাল সবকটাকে গ্রেফতার করেছি। এটা বাংলা, উত্তরপ্রদেশ নয়। মাছ-মাংস খাবেন কিনা তা আপনাকেই ঠিক করতে হবে। বিজেপি আপনাকে তা খেতেও দেয় না। আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কে নিরামিষ খাবে আর কে আমিষ খাবে তা ব্যক্তিগত পছন্দ।’
বিজ্ঞাপন
সূত্র: এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস
এমএইচআর

