বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গাজায় অন্তর্বর্তী প্রশাসন থেকে বাদ ‘ইরাকের কসাই’ টনি ব্লেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

Tony Blair
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ‘দ্য বোর্ড অব পিস’ বা অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসনের সদস্যপদ থেকে ‘ইরাকের কসাই’ খ্যাত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ট্রাম্প তার ২০-দফা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে যে অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষের তালিকা প্রকাশ করেছেন, তাতে ব্লেয়ারের সম্পৃক্ততার বিষয়ে আরব ও মুসলিম দেশগুলো আপত্তি জানিয়েছিল। এছাড়াও ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতি সুস্পষ্ট পক্ষপাতিত্বের কারণে টনি ব্লেয়ারকে বাদ দিতে মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হামাস। 


বিজ্ঞাপন


সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ব্লেয়ার এই বোর্ডের একমাত্র চিহ্নিত প্রার্থী ছিলেন, যাকে ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে প্রধান করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এমনকি তথাকথিত ওই পিস বোর্ডে ব্লেয়ারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিশ্চিত করতে লবিং এবং পর্দার অন্তরালে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। সেই ব্লেয়ারকেই অবশেষে আঞ্চলিক বিরোধিতার পর নীরবে বাদ দেওয়া হলো। 

মূলত, ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে। এমন মিথ্যা অজুহাতে ২০০৩ সালে ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলায় সরাসরি যুক্তরাজ্যকে জড়ান দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। মিথ্যা তথ্যের ওপর শুরু হওয়া ওই বর্বর যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হন। এতে করে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ‘ইরাকের কসাই’ পরিচিতি পান। সে কারণেই গাজা শান্তি বোর্ডে তার প্রার্থিতা মুসলিম বিশ্ব জুড়ে সমালোচনার জন্ম দেয়। এমনকি ট্রাম্প নিজেও অক্টোবরে স্বীকার করেছিলেন, ব্লেয়ার একজন ‘বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব’, যার গ্রহণযোগ্যতা সকল পক্ষের কাছে অনিশ্চিত ছিল।

এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এই পদক্ষেপকে ‘সঠিক দিকের পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে। 

হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু বলেছেন, ব্লেয়ারের অপসারণের খবর গাজা-সম্পর্কিত কোনও সংস্থা থেকে তাকে দূরে রাখার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি হামাসের তীব্র আহ্বানের প্রতিফলন।


বিজ্ঞাপন


তবে ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, প্রধান দায়িত্বে না থাকলেও কম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারেন সাবেক এই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। যদিও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ব্লেয়ারের অফিস।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত ২০ দফার একটি পরিকল্পনা প্রস্তাবনা আকারে পেশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েল ও গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস সে পরিকল্পনায় সায় দেওয়ার পর ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয় গাজা।

ট্রাম্পের সেই পরিকল্পনায় গাজা একটি প্রযুক্তিনির্ভর, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির অস্থায়ী শাসনের অধীনে পরিচালিত হবে। গাজার জনগণের দৈনন্দিন জনসেবা ও পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে তারা। এই কমিটিতে যোগ্য ফিলিস্তিনি এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। এর তদারকি ও নজরদারি করবে একটি নতুন আন্তর্জাতিক অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান ‌‘দ্য বোর্ড অব পিস’, যার নেতৃত্ব ও সভাপতিত্ব করবেন ট্রাম্প। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকবেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।

সূত্র: প্রেসটিভি, মিডল ইষ্ট আই

এমএইচআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর