অর্থনৈতিক সংকটে ভুগতে থাকা পাকিস্তানকে আরও ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড এক বিবৃতে জানিয়েছে, ‘আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) এর অধীনে দেশের অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যালোচনা এবং স্থিতিস্থাপকতা ও স্থায়িত্ব সুবিধা (আরএসএফ) এর অধীনে প্রথম পর্যালোচনা সম্পন্ন করার পর পাকিস্তানকে আরও ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি শর্ত দিয়েছে, ঋণের এই অর্থের মধ্যে ১০০ কোটি ডলার নিয়মিত অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং বাকি ২০ কোটি ডলার জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত অবকাঠামো নির্মাণ ও কর্মসূচিতে ব্যয় করতে হবে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যা সত্ত্বেও পাকিস্তানের শক্তিশালী অর্থনৈতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে এবং অর্থায়ন ও বহিরাগত অবস্থার উন্নতি করেছে। এর মধ্যে কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি ১.৩ শতাংশ প্রাথমিক উদ্বৃত্ত অর্জন করা হয়েছে। একই অর্থবছরে শেষে দেশটির মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৪.৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছর ৯.৪ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি এবং আগামী অর্থ বছরে এটি আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
আইএমএফ আরও জানিয়েছে, চলতি বছর পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা খাদ্যের দামের ওপর বন্যার প্রভাব প্রতিফলিত করে, তবে এটি অস্থায়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাইজেল ক্লার্ক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘একটি অনিশ্চিত বৈশ্বিক পরিবেশের মুখে পাকিস্তানকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও দৃঢ় করার জন্য বিচক্ষণ নীতিমালা বজায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে শক্তিশালী, বেসরকারি খাত-নেতৃত্বাধীন এবং টেকসই মধ্যমেয়াদী প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ত্বরান্বিত করতে হবে।’
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৪ সালে আইএমএফ পাকিস্তানকে দুই দফায় মোট ৩৩০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছিল, যা ৩৭ মাসের কিস্তিতে পরিশোধের শর্ত ছিল। সেই ৩৩০ কোটি ডলারের সঙ্গে যুক্ত হলো এই ১২০ কোটি ডলার।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এক বিবৃতিতে আইএমএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, ‘আইএমএফের এই ঋণ মঞ্জুর প্রমাণ করছে যে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংস্কার সঠিক পথে আছে।’ একই সঙ্গে সংস্কার কর্মসূচিতে সহযোগিতার জন্য দেশটির সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসিম মুনিরকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এই সহায়তা পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। তবে অর্থনীতিবিদদের মতে, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পাকিস্তানকে অন্যান্য দেশ আর ঋণদাতাদের কাছ থেকে আরও ঋণ ও সহায়তার প্রয়োজন হবে।
সূত্র: ডন, এএফপি
এমএইচআর

