লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় কমপক্ষে চারটি শহরে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এসব হামলায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ বা হতাহতের সংখ্যা এখনো জানা যায়নি।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দেশটির আন্তজাতিক স্বীকৃত সরকার এবং লেবাননের জনগণের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করার কয়েক ঘন্টা পরেই ঘোষণা দিয়ে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। এই হামলাগুলোকে হিজবুল্লাহর প্রতি ইসরায়েলের একটি বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বলেছিলেন, সামরিক উত্তেজনা এড়াতে হলে শত্রুর সাথে আলোচনা করা ছাড়া লেবাননের আর কোনও বিকল্প নেই। সরকারের এই বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ওই খোলা চিঠিতে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে যেকোনো রাজনৈতিক আলোচনার বিষয়ে সরকারকে হুাঁশয়ারি দিয়েছে।
এর কিছুক্ষণ পরই হিজবুল্লাহর অবকাঠামোত লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করা হবে বলে কয়েকটি এলাকা থেকে সাধারণ জণগণকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি বাহিনী। এরপরই সিরিজ হামলা শুরু হয়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের আয়তা আল-জাবাল, তায়বেহ এবং তায়ের দেব্বাতে তারা হামলা শুরু করেছে। এর কিছুক্ষণ পর দক্ষিণ লেবাননেরই জাওতার-আল-শারকিয়া শহরের এক জায়গার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় তারা। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে হামলা শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলে বিক্ষিপ্ত হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই সংঘাত পূর্ণ মাত্রার ইসরায়েলি আগ্রাসনে রূপ নেয়, যার ফলে ৪ হাজারে বেশি লেবানিজ নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার জন আহত হন।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় ২০২৪ সালের নভেম্বরে দুইপক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও, ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে প্রায় প্রতিদিনই আক্রমণ চালিয়ে আসছে। যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ৩৫০ জনের বেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। গতকালও হিজবুল্লাহর এলিট রেদওয়ান ফোর্সের এক কমান্ডারকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় তারা।
যদিও যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার কথা ছিল। কিন্তু তারা এখনও পর্যন্ত কেবল আংশিকভাবে সৈন্য প্রত্যাহার করেছে এবং পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে।
সূত্র: আলজাজিরা, টাইমস অব ইসরায়েল
এমএইচআর

