রোববার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গাজায় থামছেই না রক্তপাত, ইসরায়েল থেকে মুক্তি পেল ৫ ফিলিস্তিনি বন্দী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৯ এএম

শেয়ার করুন:

গাজায় থামছেই না রক্তপাত, ইসরায়েল থেকে মুক্তি পেল ৫ ফিলিস্তিনি বন্দি
ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা।

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে আরও পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। এতে স্বস্তির কিছুটা হাওয়া লাগলেও গাজায় কিছুতেই থামছে না ইসরায়েলি হামলা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় মুক্তি পাওয়া ওই পাঁচজনকে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য দেইর আল বালাহর আল আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে ভিড় করেন তাদের স্বজনেরা। কেউ মুক্তি পাওয়া প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরেন, কেউ আবার নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের খোঁজে উদ্বিগ্ন হয়ে অপেক্ষা করেন।


বিজ্ঞাপন


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর এই প্রথমবার ইসরায়েল এমন ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিল, যাদের পরিচয় আগে জানা ছিল না।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবে, এখনও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি আছেন। তাদের অনেককেই কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক রাখা হয়েছে।

মরদেহও ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল

সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির (আইসিআরসি) মাধ্যমে ইসরায়েল থেকে ৪৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ গ্রহণ করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির আওতায় এখন পর্যন্ত ২৭০টি মরদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরায়েল।


বিজ্ঞাপন


মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ফরেনসিক টিম এখন পর্যন্ত ৭৮টি মরদেহ শনাক্ত করেছে। শনাক্তের পর অনুমোদিত চিকিৎসা প্রক্রিয়া অনুসারে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, ফেরত পাওয়া অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন স্পষ্ট। তাদের হাত-পা বাঁধা, চোখে কাপড় বাঁধা, মুখমণ্ডল বিকৃত অবস্থায় ফেরত দেওয়া হয়েছে। অনেকের দেহে পরিচয়পত্রও ছিল না।

এই মরদেহ হস্তান্তর যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের অংশ। বন্দী ও মরদেহ বিনিময় প্রক্রিয়া চলছে তুরস্ক, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায়; যুক্তরাষ্ট্রও এতে যুক্ত রয়েছে।

দেইর আল বালাহ থেকে হিন্দ খুদারি জানান, ফেরত পাওয়া অনেক মরদেহে নির্যাতনের দাগ পাওয়া গেছে। অনেক পরিবার এখনও নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বেড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘যদি এসব মরদেহ শনাক্ত করা না যায়, তবে সেগুলো দেইর আল–বালাহর গণকবরে সমাহিত করা হবে।”

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ

যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত আছে। রাফাহর উত্তরে ইসরায়েলি হামলায় তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের এক সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কয়েকজন ফিলিস্তিনি ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত এলাকা ‘হলুদ লাইন’ অতিক্রম করায় তারা দক্ষিণ গাজায় হামলা চালিয়েছে। সেনারা একে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন বলে দাবি করেছে।

গাজা সিটির পূর্বাংশে ইসরায়েলি গুলিতে এক শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে আল–আহলি আরব হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে।

গাজা সিটি থেকে আল–জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম বলেন, “ইসরায়েল এখনও কোয়াডকপ্টার ড্রোন দিয়ে আংশিকভাবে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনগুলোর ওপর গ্রেনেড ফেলছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এসব কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন বলেই দেখছে।”

গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল অন্তত ১২৫ বার তা লঙ্ঘন করেছে। কার্যালয় সতর্ক করে বলেছে, এসব হামলা অব্যাহত থাকলে যুদ্ধ আবারও পূর্ণমাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর