আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের মাধ্যমে দখলদার ইসরায়েলের দুই জিম্মির মরদেহবাহী কফিন হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে কফিনগুলো হস্তান্তর করেছে রেডক্রস।
পরিচয় নিশ্চিত করতে মরদেহগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আবু করিম ফরেনসিক সেন্টারে নিয়ে যাবে ইসরায়েলি সেনারা। দুই-একদিন সময় লাগতে পারে। যদিও এর আগেও এগুলোর পরিচয় শনাক্ত হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস জানিয়েছে, তারা দুই ইসরায়েলি বন্দির মৃতদেহ হস্তান্তর করেছে— একদিন পরই যখন গাজার নাজুক যুদ্ধবিরতি ইসরায়েলের একাধিক প্রাণঘাতী বিমান হামলায় ভেঙে যায়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দফতর জানিয়েছে, গাজায় রেড ক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনী ওই দুই মৃতদেহ গ্রহণ করেছে এবং তা শনাক্তকরণের জন্য ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস ২০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্তি দেয়, এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার শহরাঞ্চল থেকেও আংশিকভাবে প্রত্যাহার সম্পন্ন করেছে।
তবে ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই ইসরায়েলি হামলায় গাজা জুড়ে ডজন ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ১০৪ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৪৬ জন শিশু ও ২০ জন নারী।
বিজ্ঞাপন
চুক্তির অংশ হিসেবে হামাস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা নিহত ২৮ জন ইসরায়েলি বন্দির মৃতদেহ ফিরিয়ে দেবে, বিনিময়ে যুদ্ধের সময় নিহত ফিলিস্তিনিদের দেহাবশেষ ফেরত পাবে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হামাস ১৫ জনের দেহাবশেষ হস্তান্তর করেছে এবং বলেছে, তারা এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা হাজারো মৃতদেহ উদ্ধারে পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করছে।
ইসরায়েল দাবি করছে, হামাস গাজায় এখনও থাকা বাকি ইসরায়েলি বন্দিদের মৃতদেহ হস্তান্তরে ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করছে।
গাজার মধ্যাঞ্চলের আজ-জুয়াইদা থেকে আল জাজিরার এক সাংবাদিক বলেন, “হামাস এখনও ইসরায়েলি বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে মৃতদেহ উদ্ধারে লজিস্টিক ও কার্যকরী চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “হামাস ভারী যন্ত্রপাতি ও বুলডোজার প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছে যাতে মৃতদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া দ্রুত করা যায়। কিন্তু ইসরায়েল এখনও হামাসকে ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করানোর অভিযোগ উঠেছে।”
মৃতদেহ উদ্ধার ও হস্তান্তর নিয়ে এই বিরোধই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের পরিকল্পনাকে জটিল করে তুলেছে।
এখনও অনেক বড় বাধা রয়ে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন ও হামাসের নিরস্ত্রীকরণের দাবি।
এফএ

