সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আসামে কংগ্রেস নেতা গাইলেন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, বিজেপির ক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

আসামে কংগ্রেসের নেতা গাইলেন বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, বিজেপির ক্ষোভ

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের একটি সভায় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া নিয়ে রাজ্যটিতে ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। 

জানা গেছে, গতকাল সোমবার শ্রীভূমি জেলার ইন্দিরা ভবনে কংগ্রেস সেবা দলের বৈঠকের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা’ তথা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলেন সিনিয়র কংগ্রেস নেতা বিধুভূষণ দাস। এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর মঙ্গলবার বিতর্ক সৃষ্টি হয়। জেলা পর্যায়ের এক কংগ্রেস নেতা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। একই সঙ্গে কংগ্রেস ‘বাংলাদেশপ্রীতিতে আসক্ত’ বলেও কটাক্ষ করেছে দলটি।


বিজ্ঞাপন


আসাম রাজ্য শাখা বিজেপি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ একটি মানচিত্র প্রকাশ করে পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চল নিজের বলে দাবি করেছে, আর এখন সেই বাংলাদেশ-আসক্ত কংগ্রেস আসামের মঞ্চে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাইছে। এর পরও কেউ যদি বুঝতে না পারে কী চলছে, তবে তারা হয় অন্ধ, নয়তো (তেমন কিছুর সঙ্গে) জড়িত।’

আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অশোক সিংহল এক এক্স বার্তায় লিখেছেন, “বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ গাওয়া হলো কংগ্রেস সভায়। এটা সেই দেশের গান, যারা ভারতের উত্তর-পূর্ব আলাদা করতে চায়!”

রাজ্যের প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা কৃষ্ণেন্দু পাল বলেন, ‘একজন কংগ্রেস নেতা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছেন। কংগ্রেসে সবকিছুই সম্ভব। তারা জানে না কখন এবং কী গাইতে হবে। আমরা পুলিশের কাছে তদন্তের দাবি করব। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করব।’


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে কংগ্রেস এই বিতর্ককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে। 

করিমগঞ্জ (শ্রীভূমি) জেলা কংগ্রেস কমিটির মিডিয়া বিভাগের সভাপতি শাহাদাত আহমদ চৌধুরী এই ঘটনায় বিধুভূষণ দাসের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘বিধুভূষণ দাস বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাননি, রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছেন।  ভাষণ শুরু করার আগে দাস বলেছিলেন যে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে শুরু করবেন। তিনি একজন শ্রদ্ধেয় নেতা, তিনি প্রতি স্বাধীনতা দিবসে ইন্দিরা ভবনে ভারতীয় ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করেন। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে করা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

লোকসভার কংগ্রেস সদস্য ও দলের উপনেতা গৌরব গগৈ বলেন, ‘বিজেপি গানটির ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যই বোঝে না। আমাদের দলের ৮০ বছর বয়সী সিনিয়র সদস্য বিধু ভূষণ দাস রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুন্দর বাংলা গান ‘আমার সোনার বাংলা’ গেয়েছিলেন। অথচ বিজেপি এটিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের গান বা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বলে সমালোচনা করছে।’

এদিকে রাজ্য পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পায়নি, তবে কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে অভিযোগ দায়ের করা হলে ভিডিয়োটি খতিয়ে দেখা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, আসামের শ্রীভূমি জেলা (আগের নাম করিমগঞ্জ) বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা বারাক উপত্যকার অংশ। সেখানে বাঙালি ভাষাভাষীদের সংখ্যা বেশি। ফলে সেখানে বাংলা গান গাওয়া অস্বাভাবিক নয় বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

সূত্র: এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস


এমএইচআর

 

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর