রোববার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছিল পাকিস্তান!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২১ পিএম

শেয়ার করুন:

pakistan

পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। এর বিনিময়ে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে কোটি কোটি ডলার পেয়েছিল ইসলামাবাদ।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সাবেক কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু। 


বিজ্ঞাপন


কিরিয়াকু জানান, তিনি যখন ২০০২ সালে সিআইএ-র সন্ত্রাস দমন অপারেশনসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তখন তাকে অনানুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়েছিল- পাকিস্তানের পরমাণু বোমাগুলো নিয়ন্ত্রণ করে যুক্তরাষ্ট্র। 

তিনি আরও দাবি করেন, তার কার্যকালের সময় পাকিস্তানকে কয়েক মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এক কথায় পারভেজ মোশাররফকে কার্যত কিনে নিয়েছিল ওয়াশিটন। মোশাররফের ভয় ছিল, পাকিস্তানের কট্টরপন্থী জঙ্গিদের হাতে তাদের পরমাণু বোমা চলে যেতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই তিনি পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়ে রেখেছিলেন।

কিরিয়াকু বলেন, ‘আমরা লাখ লাখ ডলার সাহায্য দিয়েছি, তা সে সামরিক সহায়তা হোক বা অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহায়তা। আমরা মোশাররফের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতাম, সপ্তাহে বেশ কয়েকবার। মূলত তিনি আমাদের যা ইচ্ছা তাই করতে দিয়েছিলেন।’ 

তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অর্থ পাকিস্তান কীভাবে খরচ করেছে, তা তার জানা নেই। কিরিয়াকুর মতে, মোশাররফ একটি ডাবল গেম খেলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন এবং ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অনুমতি দিয়ে রেখেছিলেন। 


বিজ্ঞাপন


সাবেক এই সিআইএ কমকর্তা বলেন, ‘পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকেও খুশি রাখতে হত মোশাররফকে। তারা আল কায়েদার তোয়াক্কা করত না। তাদের চিন্তা ছিল ভারত নিয়ে। তাই সেনাবাহিনীকে খুশি রাখতে এবং কিছু চরমপন্থীকে খুশি রাখার জন্য, মোশাররফকে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোর অনুমতি দিতে হত এবং সন্ত্রাস দমনে আমেরিকানদের সঙ্গে সহযোগিতা করার ভান করতে হত।’

কিরিয়াকু আরও দাবি করেছেন, সৌদি আরবের সরাসরি হস্তক্ষেপের পর যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানি পারমাণবিক বিজ্ঞানী আব্দুল কাদির খানকে হত্যা করার পরিকল্পনা ত্যাগ করে। 

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি ইসরায়েলি পন্থা অবলম্বন করতাম, তাহলে আমরা তাকে (আব্দুল কাদির খান) হত্যা করতাম। আমরা জানতাম সে কোথায় থাকে এবং কী করে। কিন্তু সৌদি সরকারের তার ওপর বিশেষ দৃষ্টি ছিল। সৌদিরা আমাদের অনুরোধ করে, দয়া করে তাকে একা ছেড়ে দিন। আমরা আব্দুল কাদির খানকে পছন্দ করি। আমরা তার সাথে কাজ করছি। তাকে একা ছেড়ে দিন।’ 

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সিআইএ-এর ‘নির্যাতন কর্মসূচি’ ফাঁস করে দেন কিরিয়াকু। এর দায়ে তিনি ২৩ মাস জেল খেটেছিলেন। পরে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয় এবং তিনি মুক্তি পান। 

সূত্র: এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস

এমএইচআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর