সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কলকাতায় পদ্মার ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া, আগ্রহ হারাচ্ছে ক্রেতারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৫ পিএম

শেয়ার করুন:

কলকাতায় পদ্মার ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া, আগ্রহ হারাচ্ছে ক্রেতারা

দূর্গাপুজার আগে কলকাতার বাজারগুলোতে দেখা মিলছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ইলিশ মাছ। তবে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসার খবরে প্রথমে উচ্ছাস প্রকাশ করলেও চড়া দামের কারণে আগ্রহ হারিয়েছেন কলকাতার সাধারণ মানুষ। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে কমেছে পদ্মার ইলিশ বিক্রি। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশ থেকে আরও ইলিশ আমদানি করবেন কি না এ নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ভারতীয় আমদানিকারকরা।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি ইলিশ কেনায় সাধারণ মানুষ খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। এরপর গতকাল শুক্রবার কলকাতার লেক মার্কেট, গারিয়াহাট এবং মানিকতলার খুচরা ব্যবসায়ীরা হাওড়ার পাইকারি বাজার থেকে মাত্র ৫ থেকে ২৫ কেজি করে ইলিশ কিনেছেন। এরমধ্যেই গুজরাট থেকে ইলিশের বড় একটি চালান আসার খবরে বাংলাদেশি ইলিশের বাজার আরও পড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা বলছেন গুজরাটের ইলিশ তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে।


বিজ্ঞাপন


সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বর্তমানে কলকাতায় বাংলাদেশের এক কেজির বেশি ওজনের একটি ইলিশ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে একই সাইজের গুজরাটের ইলিশ খুচরা পর্যায়ে ৮০০ থেকে ১১০০ রুপিতে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে আসা হিমায়িত ইলিশও প্রস্তুত আছে। প্রয়োজন হলে এগুলো বাজারে ছাড়া হবে, যার দাম পড়বে ১ হাজার ৫০০ রুপির মতো।

কলকাতার ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আনোয়ার মাসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশি ইলিশের দাম কমবে বলে মনে হয় না। বর্তমানে যে দাম এতে খুব কম মানুষ এ ইলিশ কিনবে।’ 

তিনি আরও জানিয়েছেন, আগামী সোমবার পর্যন্ত বাজার পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশ থেকে আরও ইলিশ আমদানি করা হবে কি না সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 


বিজ্ঞাপন


পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ৫০ টন বাংলাদেশি ইলিশ ভারতে আসে। তবে এরপর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত আর মাত্র ২০ টন ইলিশ এসেছে।

লেক মার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী অমর দাস বলেছেন, ‘ডায়মন্ড হারবার থেকে যদি আমি ভালো সাইজের মাছ পাই তাহলে আমি ১০০ কেজির স্টক কিনতে পারি। কিন্তু এবার আমি মাত্র ২০ কেজি বাংলাদেশি ইলিশ নিয়েছি। যখন ক্রেতারা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তখন এই ইলিশ মজুত করে তো কোনো লাভ নেই।’

গড়িয়াহাটের একজন ব্যবসায়ী রমেশ দাসও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি খুব কম পরিমাণে ইলিশ কিনেছি। আমার মনে হয় মৌসুম ইতিমধ্যেই সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশি ইলিশের দাম বেশ চড়া। অন্যদিকে, আমি ওড়িশা থেকে আনা তাজা ইলিশ ১ হাজার ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি করছি।’

মানিকতলার রাজু দাস বলেছেন, ‘বাংলাদেশি মাছের গঠন যদিও ভালো। কিন্তু এগুলো আকারে ছোট এবং দাম অনেক বেশি। যদি বড় মাছের ক্ষেত্রে এমন দাম হতো তাহলে ঠিক ছিল। ডায়মন্ড হারবারের মাছ যদি থাকে বাংলাদেশি মাছের কোনো ক্রেতাই থাকবে না।’

ওই বাজারে মাছ কিনতে আসা গৃহিণী রাখি দাস বলেন, ‘ইলিশের মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় দাম কম হওয়া উচিত ছিল।’

অন্যদিকে দাম চড়া হওয়া সত্ত্বেও কলকাতার অনেক মানুষের বাংলাদেশের ইলিশের প্রতি আলাদা টান আছে। আয়ুস্মান মুখার্জি নামে একজন জানান, তিনি মাছ বিক্রেতাকে আগে থেকেই ফোন করে বলে রেখেছিলেন তাকে যেন বাংলাদেশি মাছ দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার ১ কেজিরও বেশি ওজনের একটি ইলিশ ২ হাজার ৫০ রুপি দিয়ে কিনেছেন তিনি।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এমএইচআর

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর