হাজার হাজার বছর আগে বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াত ম্যামথেরা। আজ তারা অবলুপ্ত। তবে এই বিশালাকার প্রাণী যে পৃথিবীতে রাজ করতো তার প্রমাণ মিলেছে আবারও। কানাডার ইউকনে একটি সংরক্ষিত 'বেবি ম্যামথ' আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া প্রায় সম্পূর্ণ একটি ম্যামথের মমি। এমন ঘটনায় অবাক হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
কানাডার উত্তরের ক্লোনডাইক সোনার খনি শ্রমিকরা খননের সময় এই বিরল মমির দেখা পেয়েছেন। এটি প্রায় সম্পূর্ণ শিশু উলি ম্যামথের মমি। এটিকে বিরল আবিষ্কার বলছেন বিজ্ঞানীরা। খবর আল জাজিরার
বিজ্ঞাপন
বাচ্চা ম্যামথের নাম দেয়া হয়েছে নুন চো গা, যার অর্থ 'বড় বাচ্চা প্রাণী'। জানা গিয়েছে, এটি প্রায় ৩০ হাজার বছরেরও বেশি আগে বেঁচে ছিল। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, এটি উত্তর আমেরিকায় আবিষ্কৃত 'সবচেয়ে সম্পূর্ণ ম্যামথ'।

এই ম্যামথটি পারমাফ্রস্টে হিমায়িত হয়েছিল যার ফলে এর দেহাবশেষ এত ভালোভাবে সংরক্ষিত হয়েছে। পারমাফ্রস্ট হল পৃথিবীর পৃষ্ঠের সেই অংশ যেখানে তাপমাত্রা ন্যূনতম দু’বছর বা তার বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে।
এই সংক্রান্ত ছবি সামনে এসেছে সামাজিক মাধ্যমে। যা ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। ছবিগুলোতে দেখা গিয়েছে যে, ওই ম্যামথের ত্বক এখনও আগের মতোই রয়েছে এবং কিছু জায়গায় চুলের টুকরো এখনও শরীরে লেগে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
জানা গিয়েছে যে, এটি একটি স্ত্রী ম্যামথ এবং হাজার হাজার বছর আগে ইউকনে বিদ্যমান বন্য ঘোড়া, সিংহ এবং দৈত্যাকার স্টেপ বাইসনের সাথে এটি বাস করত। এই প্রসঙ্গে কানাডার পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রী রঞ্জ পিল্লাই এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'ইউকন সবসময়ই তুষার যুগ এবং বেরিঙ্গিয়া গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত।'
পাশাপাশি তিনি বলেন, 'সংরক্ষিত বেবি উলি ম্যামথটির গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারে আমরা অবাক হয়েছি।'

মন্ত্রী জানান, 'ইউকন সরকার এবং খনি শ্রমিকদের মধ্যে শক্তিশালী উদ্যোগ ছাড়া এই ধরনের আবিষ্কার সম্ভব হত না'। মূলত ওই ম্যামথটিকে পা মুড়ে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে এবং তার চোখ দু’টিও বন্ধ রয়েছে। এমনকি, তার শুঁড়টিও স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। ম্যামথটির সুসংরক্ষিত দেহ বিশেষজ্ঞদের অবাক করেছে।
এর আগে এফি নামের একটি আংশিক শিশু ম্যামথ১৯৪৮ সালে আলাস্কার অভ্যন্তরের একটি সোনার খনিতে পাওয়া গিয়েছিল। ২০০৭ সালে সাইবেরিয়াতে ৪২ হাজার বছর আগের একটি মমিফাইড ইনফ্যান্ট উলি ম্যামথ (যা লিউবা নামে পরিচিত) আবিষ্কৃত হয়েছিল। ইউকন সরকারের মতে, লিউবা এবং নুন চো গা প্রায় একই আকারের।
একে

