ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে অন্তত ৫১ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিনদিনে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে শ্রীভূমি (পূর্ব নাম করিমগঞ্জ) জেলা থেকে এই বাংলাদেশিদের গ্রেফতার করা হয় জানিয়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বলেন, গত রোববার (২৪ আগস্ট) শ্রীভূমি জেলা থেকে ৩০ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ওই জেলার সীমান্ত থেকে আরও ২১ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘পৃথক দুই ঘটনায় আমরা শ্রীভূমি সেক্টর থেকে গ্রেফতার ২১ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে ফেরত পাঠিয়েছি, যা আমাদের অনুপ্রবেশ-বিরোধী কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে অভিযান অব্যাহত রাখবে।’
আসাম পুলিশ জানিয়েছে, রোববার ৩৬ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করে। এই বাংলাদেশিদের মধ্যে ৩০ জন শ্রীভূমিতে এবং বাকি ছয়জন দক্ষিণ সালমারা মনকাচার জেলা থেকে গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুই শিশুও ছিল। পরে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সোমবার এই বিষয়ে শর্মা বলেন, শ্রীভূমি ও দক্ষিণ সালমারা থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ৩৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের জনসংখ্যার কাঠামো বদলে দিচ্ছে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার লঙ্ঘন করছে। যেখানে তাদের থাকা উচিত, তাদের অবশ্যই সেখানে ফেরত পাঠানো হবে।
পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, রোববার সকালের দিকে শ্রীভূমিতে নারী-শিশুসহ অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ৩০ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের আগে তাদের সীমান্তের কাছাকাছি দেখা যায়। ওই বাংলাদেশিরা সম্প্রতি ভারতে প্রবেশ করেছিলেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি এবং নিয়ম অনুযায়ী রোববার রাতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সহায়তায় তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এদিকে দক্ষিণ সালমারা মানকাচারে রোববার রাতে ছয় বাংলাদেশিকে গ্রেফতারের পর ফেরত পাঠানো হয়।
জেলার জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার হরেন টোকবি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুজন পুরুষ, দুজন নারী এবং এক ও তিন বছর বয়সী দুই শিশু ছিল।
তিনি বলেন, ‘আটককৃতরা জম্মু ও কাশ্মির থেকে ট্রেনে করে গুয়াহাটি আসেন এবং সেখান থেকে সড়কপথে মানকাচারে পৌঁছে সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করছিলেন। তবে তারা সফল হওয়ার আগেই, আমাদের দলও তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত দাবি করেছেন, গত বছর অনেক অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়লেও, তাদের একটি বিরাট সংখ্যক গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হয়েছে এবং তাদের জাল কাগজপত্র নিয়ে আসামে বসবাস করছেন। এই সমস্যা সমাধানের জন্য, রাজ্য সরকার ১৮ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের জন্য আধার তালিকাভুক্তি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
এমএইচআর

