রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক

যুক্তরাষ্ট্রকে লাদেনের কথা স্মরণ করিয়ে দিল ভারত 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে লাদেনের কথা স্মরণ করিয়ে দিল ভারত 

ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদের এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। তিনি দাবি করেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেদের অতীত ভুলে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অতীত স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ২০১১ সালে পাকিস্তানের সামরিক শহর অ্যাবোটাবাদে পাওয়া গিয়েছিল।

শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের ওয়ার্ল্ড লিডার্স ফোরাম অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেছেন জয়শঙ্কর।


বিজ্ঞাপন


ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘তিনি মার্কিন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছিলেন ঠিকই, তবে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ।’

ট্রাম্পের পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অসীম মুনিরকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ দুই দেশের একটি ইতিহাস রয়েছে এবং সেই ইতিহাসকে উপেক্ষা করারও ইতিহাস আছে।

তিনি বলেন, ‘তাদের পরস্পরের একটি ইতিহাস আছে। আর সেই ইতিহাসকে উপেক্ষা করারও ইতিহাস আছে। এটা প্রথমবার নয় যে, আমরা এমনটা দেখছি। আরও মজার ব্যাপার হলো, আপনি সামরিক বাহিনী থেকে দেওয়া সার্টিফিকেটে কী বলা হয়েছে, সেটা দেখেন। আবার সেই একই সেনাবাহিনী, যারা অ্যাবোটাবাদে গিয়ে আপনি জানেন কাকে খুঁজে পেয়েছিল, সেটাও দেখেন। আসল ব্যাপার হলো, যখন দেশগুলো সুবিধাবাদী রাজনীতিতে খুব বেশি মনোযোগী হয়, তখন তারা বারবার এটা করে। এর কিছু হতে পারে কৌশলগত, কিছু অন্যান্য সুবিধা বা হিসাব-নিকাশ থাকতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, এই সম্পর্ক যেভাবে এগোচ্ছে তা দেখার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের দৃঢ়তা এবং তার প্রাসঙ্গিকতাও মাথায় রাখে ভারত।


বিজ্ঞাপন


জয়শঙ্কর বলেন, ‘আবারও বলছি, আমি অবশ্যই পরিস্থিতি বা চ্যালেঞ্জ অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানাই। তবে আমি সবসময় সম্পর্কের বৃহত্তর কাঠামোগত শক্তি এবং সেখান থেকে আসা আত্মবিশ্বাসকে মাথায় রেখে তা করি। তাই আমি সেটা সেই মানসিকতা নিয়েই গ্রহণ করি। আমি জানি আমি কী করছি। আমি জানি আমার শক্তি কী, আমি জানি আমার সম্পর্কের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা কী। তাই এটাই আমাকে পথ দেখায়।’

অপারেশন সিঁদুর ও ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা দাবি বার বার অস্বীকার করেছে নয়াদিল্লি এবং দাবি করেছে পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ভারতের সুনির্দিষ্ট আঘাত ইসলামাবাদকে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করেছিল। এই বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেন, সংঘাত হলে প্রতিটি দেশই একে অপরের সঙ্গে কথা বলে।

তিনি বলেন, ‘এটা সত্যি, তখন ফোন কল করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও অনেক দেশই কল করেছিল। এটা কোনও গোপন বিষয় নয়। আমি যে ফোন কলগুলো পেয়েছিলাম, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, তার সবই আমার এক্স অ্যাকাউন্টে রয়েছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে দেশগুলো ফোন করে... মানে, আমি কি ফোন করি না? যখন ইসরায়েল-ইরান সংঘাত শুরু হলো, আমি ফোন করেছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলো, তখনও আমি ফোন করেছি।’

জয়শঙ্কর বলেন, আজকের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের যুগে, এটা একটি আন্তঃনির্ভরশীল বিশ্ব; যারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রাখে তারা এটা করবেই। কিন্তু এটা এক বিষয়। আর ভিন্ন বিষয় হলো, মধ্যস্থতার দাবি করা অথবা দাবি করা যে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যা আলোচনা হয়েছিল তা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হয়নি। 

সূত্র: এনডিটিভি


এমএইচআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর