মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শুক্রবার, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় অনিশ্চয়তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১৩ এএম

শেয়ার করুন:

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শুক্রবার, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় অনিশ্চয়তা
ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক। ফাইল ছবি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের অ্যাঙ্করিজ শহরে এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আলোচিত এই বৈঠকে ইউক্রেন সরাসরি উপস্থিত থাকছে না, ফলে যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক অনিশ্চয়তা।

বৈঠকের আগে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার হয়েছে। বুধবার ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে ফোনালাপে অংশ নেন ট্রাম্প। একই সময় তিনি কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও। বৈঠকের আগমুহূর্তে এ আলোচনার লক্ষ্য ছিল—ইউক্রেনের অবস্থান ও ইউরোপের মিত্রদের উদ্বেগগুলো বুঝে নেওয়া এবং পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় সে অনুযায়ী প্রস্তুত হওয়া।


বিজ্ঞাপন


বৈঠকটি হবে আলাস্কার একটি সামরিক ঘাঁটিতে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, এটি হবে একান্ত আলোচনা। সেখানে ট্রাম্প ও পুতিন ছাড়া কেউ উপস্থিত থাকবেন না। এমন সংবেদনশীল বৈঠকের আগে হোয়াইট হাউজ থেকে জানানো হয়েছে, এখানে তাৎক্ষণিক কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির আশা করা হচ্ছে না। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট বলেন, এই যুদ্ধে জড়িত পক্ষগুলোর মধ্যে কেবল একটি পক্ষই এই বৈঠকে থাকছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আলোচনায় বসছেন, কারণ তিনি পরিস্থিতি নিয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে চান এবং কীভাবে যুদ্ধ থামানো যায়, তা নিয়ে ভাবছেন।

বৈঠকের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, যদি রাশিয়া যুদ্ধ থামানোর বিষয়ে সম্মত না হয়, তবে এর পরিণতি হবে খুবই ভয়াবহ। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানান, যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে উভয়পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। ইউক্রেন ও রাশিয়া—দুই দেশকেই কিছু ভূমি ত্যাগ করতে হতে পারে। এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ভূখণ্ড ছেড়ে দিয়ে কোনো সমাধান সম্ভব নয়। এটি আমাদের সংবিধানবিরোধী। এবং আমাদের অনুপস্থিতিতে কোনো চুক্তি হলে, তা আমরা মেনে নেব না।

ট্রাম্প অবশ্য জানিয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে আরও একটি বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে এবং সে ক্ষেত্রে ইউক্রেনকেও আলোচনায় রাখা হবে।


বিজ্ঞাপন


বৈঠকের আগে বার্লিনে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলেনস্কি। পরে তারা ট্রাম্পের সঙ্গেও ফোনে আলোচনা করেন। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তে—সবাই এই আলোচনায় যুক্ত ছিলেন।

আলোচনা শেষে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়, যুদ্ধবিরতির কোনো চুক্তি হলে তাতে অবশ্যই ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আর পুতিন যদি কোনো সমঝোতায় রাজি না হন, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানানো হয়।

ফোনালাপ শেষে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, এই হত্যাযজ্ঞ থামাতে হলে আমাদের বক্তব্য গুরুত্বসহকারে শুনতে হবে। রাশিয়ার ওপর চাপ দিলে কাজ হয়। আমরা ট্রাম্পকে আমাদের যৌথ অবস্থান জানিয়েছি। যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টায় ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্রদের বাইরে রেখে কোনো শান্তি সম্ভব নয়। সূত্র: রয়টার্স 

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর