ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত আল-জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর হত্যাকাণ্ড তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পৃক্ততা চান দেশটির ২৪ সিনেট সদস্য। এ বিষয়টিতে তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে জুনের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র আবু আকলেহর হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন তদন্ত চায়। এর পরেই মার্কিন আইন প্রণেতারা এমন আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
১১ মে তারিখে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে একটি সামরিক অভিযানের সংবাদ সম্প্রচারের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আবু আকলেহ ও তার সহকর্মীদের ওপর গুলি চালায়। এভাবেই ওই নারী সাংবাদিককে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ আছে। ৫১ বছর বয়সী এ সাংবাদিক ‘প্রেস’ লেখা ভেস্ট ও হেলমেট পরার পরেও তাকে পিছন থেকে গুলি করা হয়। এ সময় তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পরে আল জাজিরাকে বলেছে, তারা তাদের পূর্বের অবস্থান বজায় রেখেছে। তারা চায় ইসরায়েলই ওই নারী সাংবাদিককে হত্যার বিষয়টি তদন্ত করুক। তবে তারা বারবার ন্যায্য ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন যে আবু আকলেহ ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। এ বিষয়টি বহু তদন্ত দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও কাতারের তদন্তেও ইসরায়েল দোষী বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া কাতারি সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা দক্ষ ব্যালিস্টিক বিস্ফোরক ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তারা নিশ্চিত করেছেন যে নিহত নারী সাংবাদিকের মাথা থেকে বের করা বুলেটটি আর্মার (বর্ম) ছিদ্র করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল এবং এটা এম-৪ রাইফেলে ব্যবহৃত হয়। ওই বুলেটটি থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক বিশ্লেষন করে জানা গেছে এটা ৫.৫৬ মিমি ক্যালিবার। ইসরায়েলি বাহিনী এ ধরনের বুলেট ব্যবহার করে।
এরপর বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে মার্কিন আইন প্রণেতারা ওই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন ডেমোক্র্যাট সদস্য, এছাড়া তাদের সঙ্গে দু’স্বতন্ত্র সদস্যও এমন আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, নিহত নারী সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত আমেরিকান।
এমন সময়ে এ চিঠিটির প্রসঙ্গ এসেছে যখন ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা কীভাবে তদন্ত পরিচালনা করা উচিত তা নিয়ে দ্বন্দ্বে আছেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ চায় না যে এ হত্যাকাণ্ড তদন্তে ইসরায়েলের কোনো সম্পৃক্ততা থাকুক। কারণ তারা যুক্তি দিয়ে বলেছেন, তদন্তে ইসরায়েল সম্পৃক্ত হলে তা আর সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হবে না।
সূত্র : আল-জাজিরা
এমইউ