ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় ‘অড’ অঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলে প্রায় আট দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে ইউরোপের এই দেশটি।
বিশাল এই দাবানলে রাজধানী প্যারিসের চেয়েও বড় এলাকাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে মারা গেছেন একজন, ধ্বংস হয়েছে অন্তত ২৫টি বসতবাড়ি। খবর বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
দাবানলে সাঁ লরঁ দ্য লা ক্যাবরিস নামের একটি গ্রামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এই গ্রামটি পারপিনিয়াঁ শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে।
আগুন দ্রুত বন ও গ্রামে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা নিরাপত স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনেক সড়ক।
দাবানল কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু বলেন, এটি এক নজিরবিহীন দুর্যোগ। ইতোমধ্যে ১৫ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়ে ছাই হয়েছে, যা আগের কয়েক বছরে পুরো ফ্রান্সজুড়ে পোড়া এলাকার সমান।
১৯৪৯ সালের পর এত বড় একক দাবানল আর হয়নি বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো। ডাচ পর্যটক রেনাতে কুট জানান, এক মুহূর্ত আগেও ফোনে আমাদের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। চোখে আগুন দেখেই গাড়িতে লাফ দিয়ে উঠে পালাতে হয়েছে— কোনও কিছু নিয়ে যাওয়ারও সময় পাইনি। অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছি।
বিজ্ঞাপন
স্প্যানিশ পর্যটক ইসা মেদিনা বলেন, এটা বিশ্বাসই করা যাচ্ছে না— একেবারে ধ্বংসযজ্ঞ।
প্রায় ২,০০০ দমকল কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এলাকায় প্রায় ২৫০০ পরিবার বিদ্যুৎহীন। আগুন ঘণ্টায় প্রায় ৫.৫ কিমি গতিতে ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র এরিক ব্রোকার্দি।
এদিকে প্রচণ্ড গরম ও দিক পরিবর্তনশীল বাতাস দাবানল নিয়ন্ত্রণকে আরও কঠিন করে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরম ও শুষ্কতা দাবানলের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনেও চলমান দাবদাহে দাবানল বেড়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় তারিফা অঞ্চলে ক্যাম্পসাইটে একটি ক্যারাভানে আগুন ধরে গেলে তা দ্রুত দাবানলে রূপ নেয়।
ঘণ্টায় ৫০ কিমি বেগে বাতাস ও তীব্র গরমে আগুন নেভানোর পরও আবার জ্বলে ওঠে বলে জানান আন্দালুসিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও সান্স।
অন্যদিকে পর্তুগালেও চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়েছে, যা গত বছরের তুলনায় আট গুণ বেশি। এর অর্ধেকই পুড়েছে গত দুই সপ্তাহে।
-এমএমএস

