রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো শুরু করল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ০৬:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো শুরু করল পাকিস্তান

প্রত্যাবাসনের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই নিবন্ধিত আফগান শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করেছে পাকিস্তান। এতে ১০ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিককে পাকিস্তান থেকে বিতারিত করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। 

বুধবার জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বরের নির্ধারিত সময়সীমার আগেই পাকিস্তানজুড়ে বৈধভাবে নিবন্ধিত আফগান শরণার্থীদের গ্রেফতার ও ফেরত পাঠানোর তথ্য পাওয়া গেছে। এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।


বিজ্ঞাপন


এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, ‘আফগানিস্তানের শরণার্থীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো বন্ধ করে স্বেচ্ছায়, ধারাবাহিকভাবে এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য একটি মানবিক পদ্ধতি গ্রহণে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় ইউএনএইচসিআর।’

এদিকে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়েছে, নিবন্ধিত শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন অবিলম্বে শুরু হবে। আর আনুষ্ঠানিকভাবে আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময়সীমা শেষে শুরু হবে।

অন্যদিকে ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র কায়সার খান আফ্রিদি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ১ আগস্ট থেকে ৪ আগস্টের মধ্যে শত শত নিবন্ধিত আফগান শরণার্থীকে আটক করে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। 

প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের দীর্ঘ যুদ্ধ থেকে পালিয়ে বহু আফগান ১৯৮০ সালের পর থেকে পাকিস্তানে বসবাস করে আসছেন। দেশটিতে বর্তমানে ১৩ লাখের বেশি আফগান নাগরিকের কাছে প্রুফ অব রেজিস্ট্রেশন (পিওআর) কার্ড রয়েছে। এছাড়া আরও ৭ লাখ ৫০ হাজারের কাছে আফগান সিটিজেন কার্ড (এএফসি) নামে পরিচিত আরেক ধরনের নিবন্ধিত কার্ড রয়েছে।

ইউএনএইচসিআর সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘এত বিশাল সংখ্যক আফগান শরণার্থীকে তাড়াহুড়ো করে ফেরত পাঠানো হলে দেশটিতে তাদের জীবন ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। এর ফলে কেবল আফগানিস্তানে নয়, বরং পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

তবে পাকিস্তান কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসলামাবাদ চায় বৈধ ভিসাধারী ছাড়া সকল আফগান নাগরিককে পাকিস্তান ত্যাগ করতে হবে, যা ২০২৩ সালের শেষদিকে চালু করা ‘অবৈধ বিদেশি প্রত্যাবাসন পরিকল্পনার’ অংশ। 

পাকিস্তান অতীতের বিভিন্ন জঙ্গি হামলা ও অপরাধের জন্য আফগান নাগরিকদের দায়ী করে, যারা দেশটির বৃহত্তম অভিবাসী গোষ্ঠী। তবে আফগানিস্তান এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং প্রত্যাবাসনকে জোরপূর্বক নির্বাসন বলে অভিহিত করেছে।

এদিকে পাকিস্তানের পাশাপাশি সীমান্ত ইরান থেকেও ব্যাপকভাবে নির্বাসনের মুখোমুখি হচ্ছে আফগান নাগরিকরা। বিশেষ করে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধের পর ইরানে ‘অবৈধ’ আফগান শরণার্থীদের ধরপাকড় ও জোরপূর্বক দেশছাড়া করার হার বেড়েছে। 

জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম) জানায়, শুধুমাত্র জুন মাসেই দুই লাখ ৫৬ হাজারের বেশি আফগানি ইরান ছেড়েছে।

সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ইরানে প্রায় ৬০ লাখ আফগান বাস করে। তবে বৈধ কাগজপত্রহীনদের সঠিক সংখ্যা জানা যায় না। জাতিসংঘের হিসেবে, প্রায় ২০ লাখ আফগান ইরানে বিনা কাগজে বসবাস করছে।

সূত্র: রয়টার্স

এমএইচআর

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর