রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ট্রাম্পের সাবমেরিন মোতায়েনের প্রতিক্রিয়ায় যা বললো রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

ট্রাম্পের সাবমেরিন মোতায়েনের প্রতিক্রিয়ায় যা বললো রাশিয়া

সম্প্রতি রাশিয়ার জলসীমার কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে তেমন গুরুত্বই দেয়নি  রাশিয়া। একই সঙ্গে পারমাণবিক ইস্যুতে মন্তব্য সম্পর্কে ‘সবার সতর্ক থাকা উচিত’ বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।

সোমবার (০৪ আগস্ট) ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে, এটা স্পষ্ট যে আমেরিকান সাবমেরিনগুলো আগের থেকেই যুদ্ধের দায়িত্বে রয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটাই প্রথম কথা। কিন্তু সাধারণভাবে, অবশ্যই আমরা এ ধরনের বিতর্কে জড়াতে চাইব না এবং কোনোভাবেই এটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাইব না।’ 


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, পারমাণবিক ইস্যুতে বক্তৃতা সম্পর্কে সবারই খুব, খুব সতর্ক থাকা উচিত। তবে রাশিয়া ট্রাম্পের বক্তব্যকে পারমাণবিক উত্তেজনা বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসেবে দেখে না।’
 
পেসকভ বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না যে আমরা এখন কোনো উত্তেজনা বৃদ্ধির কথা বলছি। তবে এটা স্পষ্ট, খুব জটিল ও সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে, যা অবশ্যই অনেকে খুব আবেগগতভাবে উপলব্ধি করে।’

এদিকে ট্রাম্প তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার রাশিয়ায় পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন। অতীতে পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় বসলেও তাকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে ব্যর্থ হন উইটকফ।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্রেমলিন উইটকফের এই সফর মস্কোর অনুরোধে হচ্ছে কিনা তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং  এই সফরের উদ্দেশ্য কী তাও স্পষ্ট করেনি।


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে পেসকভ বলেছেন, আমরা উইটকফকে মস্কোতে স্বাগত জানাই। তার সঙ্গে যোগাযোগকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ বলে মনে করি।

মূলত, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের এক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রবাহী দুটি সাবমেরিনকে ‘যথাযথ অঞ্চলে’ (রাশিয়ার কাছাকাছি) পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘একটি হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং আমরা এটিকে উপযুক্ত মনে করিনি। তবে আমাকে সতর্ক হতে হবে। আমি আমাদের জনগণের নিরাপত্তার প্রয়োজনে এটি করেছি। রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়েছেন এবং আমরা আমাদের মানুষের সুরক্ষা দিতে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন ‘যদি এই ধরনের বোকামি ও উস্কানিমূলক বিবৃতিগুলোর চেয়ে বেশি কিছু হয়। কথা খুবই শক্তিশালী এবং এটি অপ্রত্যাশিত পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। আমি আশা করি এটা সেরকম হবে না।’ তবে সাবমেরিন দুটি কোথায় মোতায়েন হচ্ছে সেটি তিনি বলেননি।

ট্রাম্প ও মেদভেদেভ সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক মাধ্যমে পরস্পরের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ব্যক্তিগত আক্রমণ করে যাচ্ছেন।

গত সোমবার ট্রাম্প হুমকি দেন যদি রাশিয়া আগামী ১০ দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ না করে, তাহলে রাশিয়ার ও তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখা দেশে ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হবে। 

প্রতিক্রিয়ায় মেদভেদেভের ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে মেদভেদেভ বলেন, ‘৫০ বা ১০ দিন...তার (ট্রাম্পের) দুটি জিনিস মনে রাখা উচিত: ১. রাশিয়া ইসরায়েল বা ইরান নয়। ২. প্রতিটি আল্টিমেটাম একধরনের হুমকি এবং যুদ্ধের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। এই কৌশল রাশিয়া-ইউক্রেন নয়, বরং ট্রাম্পকে তার নিজের দেশের সঙ্গেই যুদ্ধের পথে টেনে নিতে পারে। এই পথে এগোবেন না।’

জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘মেদভেদেভকে বলুন- যিনি রাশিয়ার ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং যে নিজেকে এখনো প্রেসিডেন্ট ভাবে— সে তার ভাষা সংযত করুক। সে এখন একেবারে বিপজ্জনক অঞ্চলে পা রেখেছে।’
 
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি 

এমএইচআর

 

 

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর