আন্তর্জাতিক বাজার থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৯ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ সরকার। আগামী ৭ আগস্ট এ দরপত্র আহ্বান করা হবে। আর এই খবরেই ভারতে নন-বাসমতি চালের দাম ৮-১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির ব্যবসায়ীদের আশা বাংলাদেশ নতুন করে যে ৯ লাখ টন চাল কিনতে যাচ্ছে সেটির বড় একটি অংশ রফতানির সুযোগ পাবেন তারা। কারণ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় তাদের চালের দাম কম এবং তাদের জন্য বাংলাদেশে পণ্য পরিবহন সহজ।
বিজ্ঞাপন
বাণিজ্যিক একটি সূত্রে বরাতে সংবাদ মাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশের রফতানির ঘোষণার কারণে স্বর্ণা, মিনিকেট এবং সোনা মাসুরির চাহিদা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশে চাল রফতানিকারক বড় প্রতিষ্ঠান ভিলা গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সুরাজ আগারওয়াল ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রফতানির খবরের প্রভাব ইতিমধ্যে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পড়া শুরু হয়েছে। যেখানে ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম গত কয়েক সপ্তাহে ৮-১০ শতাংশ বেড়েছে।’

দেশটির চাল প্রক্রিয়াজাতকারকরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে নন-বাসমতি চালের চাহিদা অনেক বেশি। বাংলাদেশ চাল আমদানি করার খবরে অভ্যন্তরীণ বাজারে গত কয়েক সপ্তাহে ৭ থেকে ১৩ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি স্বর্ণা ৩২ রুপিতে এবং মিমিকেট ও সোনা মাসুরি ৪৫ রুপি প্রতি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ভারতের চাল রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভি কৃষ্ণা রাও বলেছেন, ‘মালামাল পরিবহনের সুবিধা এবং ব্যাপক উৎপাদনের কারণে ভারত বাংলাদেশে অনেক চাল রফতানি করবে বলে আমাদের আশা।’
চাল রফতানিকারকরা জানিয়েছেন, ৯ লাখ টনের মধ্যে বাংলাদেশের সরকারি সংস্থাগুলো ৪ লাখ টন আমদানি করবে। বাকি ৫ লাখ টন কিনতে বেসরকারি আমদানিকারকদের অনুমতি দেওয়া হবে। আগামী মাসে দরপত্রের মাধ্যমে চাল কেনার আদেশ পাওয়ার ছয় সপ্তাহের মধ্যে সেগুলো রফতানি করতে হবে রফতানিকারকদের।
পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা এবং বিহারে উৎপাদিত মিনিকেট এবং সোনা মাসোরি চাল বাংলাদেশে রফতানি করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির ব্যবসায়িক একটি সূত্র জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সাধারণত আগস্টের পর চাল আমদানি করে থাকে। কিন্তু জুলাই ও আগস্টে অত্যাধিক বৃষ্টির কারণে বপন করা ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে এবার আগেই চাল আমদানি করছে ঢাকা।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ২০২৫ অর্থবছরে ১৩ লাখ টন চাল আমদানি করেছে। এর মধ্যে ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল রফতানি করে ভারত, যা দেশটির মোট নন-বাসমতি চাল রফতানির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এর আগে ২০২২ অর্থবছরে ভারত বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ১৬ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল রফতানি করেছিল।
-এমএইচআর

