শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গাজায় 'হত্যাযজ্ঞ' চালানোর গ্রিন সিগন্যাল ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

গাজায় 'হত্যাযজ্ঞ' চালানোর গ্রিন সিগনাল ট্রাম্পের

অবরুদ্ধ ও যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজায় দখলদার ইসরাইলের সামরিক অভিযান আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

তিনি বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘ফিনিশ দ্য জব, দে ওয়ান্ট টু ডাই’। অর্থাৎ, প্রকারান্তে তিনি নেতানিয়াহুকে গাজায় 'হত্যাযজ্ঞ' চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


ট্রাম্প এই নির্দেশ এমন এক সময় দিলেন, যার কয়েক সপ্তাহ আগেই তিনি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ‘অত্যন্ত কাছাকাছি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন।

cnn

এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই নির্দেশকে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের একটি নাটকীয় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

স্কটল্যান্ড সফরে রওনা হওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইসরায়েলের এখন ‘কাজটা শেষ করে ফেলা উচিত’। কারণ হামাস ‘আলোচনায় বসতে চায় না। তারা আসলে মরতে চায়’।


বিজ্ঞাপন


ট্রাম্পের ভাষায়, ‘আমার মনে হয়, ওরা (হামাস) মরতে চায়, আর সেটা খুবই, খুবই দুঃখজনক। কাজটা শেষ করতেই হবে’। 

ট্রাম্পের এসব মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তারা গাজাকে ‘জীবন্ত লাশে ভরা অঞ্চল’ হিসেবে বর্ণনা করছেন এবং দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে কঠোর সতর্কতা দিচ্ছেন। 

এসব সত্ত্বেও ট্রাম্পের বক্তব্য স্পষ্টভাবে ইসরায়েলের চলমান ২১ মাসব্যাপী চলা সামরিক অভিযানের নামে গণহত্যায় সমর্থন জোগাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এদিকে গত সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ কাতারের দোহায় চলমান মার্কিন-মধ্যস্থতাকারী যুদ্ধবিরতি আলোচনা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। 

তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, ‘হামাসের মধ্যে আন্তরিকতা ও সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে’ এবং এখন যুক্তরাষ্ট্র বিকল্প পথে জিম্মিদের মুক্তির চেষ্টা করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন আকস্মিক অবস্থান পরিবর্তনে কাতার ও মিসরের কূটনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এই দেশ দুটিই মূলত গাজা যুদ্ধবিরতির প্রধান মধ্যস্থতাকারী। 

দোহায় আলোচনার সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্র বলেন, এটা এক রকম ভূমিকম্প। এখন আমরা আফটারশক সামাল দিচ্ছি।

তবে মিসর ও কাতারের কর্মকর্তারা আলোচনার এই অচলাবস্থাকে ‘এ ধরনের জটিল পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক’ বলে অভিহিত করে গুরুত্ব কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। 

এক যৌথ বিবৃতিতে মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

এদিকে ইসরায়েলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, আলোচনাগুলো ‘একেবারেই ভেঙে পড়েনি’ এবং একটি নতুন চুক্তির জন্য এখনো পথ খোলা আছে। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, হামাস বাস্তবতায় ফিরে আসবে, যাতে বাকি ফারাকগুলো দূর করা যায়’।

এদিকে ট্রাম্প দাবি করে বলছেন, হামাসের হাতে থাকা অনেক জিম্মি ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে বা নিহত হয়েছে। যার ফলে তারা আর আলোচনায় চাপ তৈরি করতে পারছে না। 

তিনি হামাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ‘তারা চুক্তি করতে চায়নি’। ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তাদের (ইসরাইল) লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, শেষ করতে হবে সব কিছু... তাদের সরিয়ে দাও’।

-এমএমএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর