রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘গাজায় কেউ ক্ষুধার্ত নেই’, দাবি ইসরায়েলি মন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

‘গাজায় কেউ ক্ষুধার্ত নেই’, দাবি ইসরায়েলি মন্ত্রীর

গাজা উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক মাত্রায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছে বিশ্বে বিভিন্ন দেশসহ ১০০টিরও বেশি এনজিও ও মানবাধিকার গোষ্ঠী। তাদের অভিযোগ, ইসরায়েল গাজার ভেতরে খাদ্য বিতরণ করতে দিচ্ছে না। তবে ইসরায়েলের অতি-ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভির দাবি করেছেন, গাজায় প্রকৃত ক্ষুধা নেই। 

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বেন গভির বলেছেন, ‘গাজায় কেউ ক্ষুধার্ত নেই। যদি তারা ক্ষুধার্ত থাকত, তাহলে তারা (ইসরায়েলি) জিম্মিদের বাড়িতে ফিরিয়ে দিত।’


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, ‘আমি গাজায় হামাসকে ক্ষুধার্ত রাখার পক্ষে।’

অতি-ডানপন্থী ‘জুয়িস পাওয়ার পার্টির’ নেতা বেন গভির দীর্ঘদিন ধরেই গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধ করার পক্ষে কথা বলে আসছেন। তিনি গাজাকে সম্পূর্ণরূপে দখল, এর ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। তার সর্বশেষ মন্তব্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়ার নীতির পক্ষে।

এদিকে বেন গভিরের মন্তব্য বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জাতিসংঘসহ মানবিক সংস্থাগুলোর অবস্থান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, যারা গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করেছে এবং ইসরায়েলকে খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে।

আরও পড়ুন

গাজায় দুধের সরবরাহ নেই, মৃত্যুর মুখে হাজার হাজার শিশু

গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় ৬ হাজার ট্রাক ত্রাণ: জাতিসংঘ

গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে, দাবি শতাধিক এনজিওর 

গাজা উপত্যকা বর্তমানে তার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে খাদ্য, চিকিৎসা সরবরাহ এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশ ইসরায়েলি অবরোধের কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। 

এদিকে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ একটানা বেশ কয়েক দিন ধরে কিছু না খেয়ে আছে। 

ডব্লিউএফপির অনুমান অনুসারে, গাজার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ চরম দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। এরমধ্যে ১ লাখ নারী ও শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। 

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো উপত্যকাজুড়ে ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন, বিশেষ করে শিশু, অসুস্থ এবং বয়স্কদের মধ্যে চরম অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ-এর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজা বিশ্বের ‘একমাত্র দুর্ভিক্ষের সংজ্ঞায়িত অঞ্চল’ যেখানে শতভাগ জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে গত ২৪ ঘণ্টায় দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কারণে নতুন করে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর ক্ষুধাজনিত কারণে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১২২ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৮৩ জনই শিশু।

সূত্র: আনাদোলু, আলজাজিরা

এমএইচআর

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর