প্রায় তিন বছর পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সর্বশেষ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ফোনে কথা বলেছিলেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দুই দেশের এই দুই নেতা।
ম্যাক্রোঁর অফিস জানিয়েছে, দুই ঘণ্টাব্যাপী ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ফোনালাপে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ীভাবে এই সংঘাত অবসানের জন্য আলোচনা শুরু করতে পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়েও আলোচনা করেছেন দুই নেতা।
বিজ্ঞাপন
ক্রেমলিন প্রেস সার্ভিস জানিয়েছে, ইউক্রেন প্রসঙ্গে পুতিন ম্যাক্রোঁর কাছে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, যুদ্ধটি ‘পশ্চিমাদের নীতির প্রত্যক্ষ পরিণতি’, যা গত কয়েক বছর ধরে ‘রাশিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থ উপেক্ষা করেছে’।
যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পুতিন বলেন, যেকোনো শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে অবশ্যই রাশিয়ার অধিকৃত ভূখণ্ডের দাবি ছেড়ে দিতে হবে।
ম্যাক্রোঁর কার্যালয় জানিয়েছে, ‘পুতিনের মন্তব্যের জবাবে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি ফ্রান্সের অটল সমর্থনের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে শুধু ইউক্রেনেরই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আরও জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ম্যাক্রোঁ। ফোনালাপে তিনি ইরানের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
জবাবে পুতিন বলেছেন, ‘পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে ইরানের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো প্রয়োজন। তবে কূটনীতিক উপায়ে এই সমস্যা সমাধানে মস্কো সবধরনের সহায়তা করতে প্রস্তত।’
ম্যাক্রোঁর কার্যালয় জানিয়েছে, ইউক্রেন এবং ইরান নিয়ে তাদের আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দুই নেতা।
একটি ফরাসি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ম্যাক্রোঁ পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের আগে ও পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেন এবং আলোচনা সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন। এছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এই ফোনালাপের বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর ম্যাক্রোঁ এবং পুতিন নিয়মিত আলোচনা করেছেন। এতে কিছু ইউরোপীয় মিত্রদের সমালোচনার মুভে পড়েন ম্যাক্রো। এরপরই পুতিনের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখেন তিনি।
সূত্র: রয়টার্স
-এমএইচআর