শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ঢাকা

গবেষণা

ইউএসএইডের সহায়তা বন্ধে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম

শেয়ার করুন:

ইউএসএইডের সহায়তা বন্ধে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা— ইউএসএইডের তহবিল কাটছাঁট এবং সংস্থাটি ভেঙে দেওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনার ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে এক কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ, যার এক-তৃতীয়াংশই ছোট শিশু- মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে এক গবেষণায়। 

সোমবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিখ্যাত চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। এটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন স্পেনের সেভিয়ায় বিশ্বের নেতা ও ব্যবসায়ী নেতারা এক দশকের সবচেয়ে বড় সাহায্য সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন


চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউএসএইডের বাজেট ৮৩ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দেন। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, সরকোরের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্পের তৎকালীন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা ইলন মাস্ক বলেন, ইউএসএইড-এর তহবিল কাটছাঁটে বড় ভূমিকা পালন করেন। 

এদিকে মানবাধিকারকর্মী এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে বলেছেন, ইউএসএইডের তহবিল বহু দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের দেশে- বিশেষ করে আফ্রিকান অঞ্চলে দেশগুলোতে স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য অবিচ্ছেদ্য বিষয় ছিল।

গবেষণার সহলেখক, বার্সেলোনার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথের (আইএসগ্লোবাল) গবেষক দাভিদে রাসেলা বলেন, ‘এই অর্থের ধাক্কা অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য মহামারী বা বড় আকারের সশস্ত্র সংঘাতের মতোই ধ্বংসাত্মক হবে।’

১৩৩টি দেশের তথ্য পর্যালোচনা করে আন্তর্জাতিক গবেষকদের দল অনুমান করেছে ২০০১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত ইউএসএইড-সাপোর্টেড প্রোগ্রামগুলো বিশ্বজুড়ে প্রায় ৯ কোটি ১৮ লাখ প্রাণ বাঁচিয়েছে, যার মধ্যে ৩ কোটিই শিশুও ছিল। 


বিজ্ঞাপন


গবেষকরা বলছেন, ইউএসএইডের বর্তমান বাজেট কমানো ও সংস্থাটি বিলুপ্তির পথে এগোলে ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি নতুন মৃত্যু হতে পারে। এর মধ্যে ৪৫ লাখেরও বেশি ৫ বছরের কম বয়সি শিশু থাকবে।

us

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের মানবিক তহবিলের ৩৮ শতাংশই দেয় যুক্তরাষ্ট্র। শুধু গত বছরই তারা ৬১ বিলিয়ন ডলার বিদেশি সাহায্য দিয়েছে, যার অর্ধেকের বেশি গেছে ইউএসএইডের মাধ্যমে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ইউএসএইডের সহায়তা পেলে শিশু মৃত্যুহার ৩২ শতাংশ কমেছে, যা মৃত্যুহার হ্রাসে বড় অবদান রেখেছে। ইউএসএইডের অর্থায়নে এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া ও অবহেলিত ট্রপিক্যাল রোগ থেকে মৃত্যুহার যথাক্রমে ৬৫ শতাংশ এবং ৫০ শতাংশ কমেছে।

গবেষকরা বলেছেন, ‘যদি ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ঘোষিত তহবিল কাটছাঁট স্থায়ী হয় এবং পূর্বের সহায়তা ফিরে না আসে, তবে ২০৩০ সালের মধ্যে বিস্ময়কর মাত্রার অপ্রয়োজনীয় মৃত্যু ঘটবে।’

এদিকে চলতি বছরের মার্চে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, মাত্র ছয় সপ্তাহের এক পর্যালোচনার পর ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএইডের ৮০ শতাংশ কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে। অবশিষ্ট প্রায় ১ হাজার কর্মসূচি কংগ্রেসের পরামর্শক্রমে পররাষ্ট্র দপ্তরের অধীনে নতুনভাবে পরিচালিত হবে।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স

-এমএইচআর 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর