মধ্যপ্রাচ্যে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। তারা মনে করছেন— ট্রাম্প এই বিষয়ে পরিষ্কার কোনো কৌশল বা দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছেন না।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরানবিরোধী সামরিক অভিযানে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মনোভাব নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। এর পেছনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভূমিকা আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বিজ্ঞাপন
ইরানি বংশোদ্ভূত মার্কিন বিশ্লেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব নেগার মরতাজাভি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নেতানিয়াহু কৌশলে ট্রাম্পকে প্রভাবিত করছেন এবং যুদ্ধের পথে ঠেলে দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ট্রাম্প নিজের নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন, তিনি যুদ্ধ নয়, শান্তি চান। নিজেকে ‘শান্তির প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এখনো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামেনি, গাজায় যুদ্ধ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, আর মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বিশ্ব।
নেগার মরতাজাভি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, ট্রাম্প আদৌ জানেন কি না, তিনি কী করছেন। তার ভাষায়, ‘আমি নিশ্চিত নই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানেন কি না, তিনি আসলে কী চান। তার সিদ্ধান্তগুলো লক্ষ্যহীন ও পরস্পরবিরোধী।’
মরতাজাভি আরও বলেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এখন শুধু দুই দেশের বিষয় নয়। এটি স্পষ্টভাবে অঞ্চলভিত্তিক শক্তির ভারসাম্য এবং শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা হিসেবেই দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘ট্রাম্প এক কথা বলেন, আর করেন আরেকটা। তার কথাবার্তা ও নীতি—এই দুইয়ের মধ্যে মিল নেই।’
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানকে মোকাবিলা করতে গিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন এমন এক পথে পা বাড়িয়েছে, যেখানে সংঘাত শুধু ইরানের সঙ্গে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি একটি বড় যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে পারে।
নেগার মরতাজাভির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, ওয়াশিংটন থেকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো কেবল অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রভাবে নয়—এর পেছনে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের চাপ এবং ভূরাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির হিসাব।
তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তহীনতা কেবল সংঘাত বাড়িয়ে তুলবে এবং এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ। সূত্র: আল জাজিরা
এইউ

