সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ইসরায়েলে ইরানের ‘হাইব্রিড’ হামলা: আয়রন ডোম ব্যর্থ, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২৫, ০৩:০৯ এএম

শেয়ার করুন:

ইসরায়েলে ইরানের ‘হাইব্রিড’ হামলা: আয়রন ডোম ব্যর্থ, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ইসরায়েলের ওপর নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের সমন্বয়ে হাইব্রিড হামলা শুরু করেছে ইরান, যা প্রতিহত করতে ইসরায়েলের অত্যাধুনিক আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে রোববার (১৫ জুন) মধ্যরাতে বিবিসি ও রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান তেল আবিব, হাইফা এবং অন্যান্য শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে এই নতুন হামলা চালিয়েছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সব স্তর ভেদ করে ইরানের ডজন ডজন ক্ষেপণাস্ত্র বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।


বিজ্ঞাপন


বিবিসি জানিয়েছে, জেরুজালেম এবং তেল আবিবের রাতের আকাশে দফায় দফায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, কারণ আয়রন ডোম ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল। শহরগুলোতে সাইরেন বাজানো হয়েছে এবং লোকজনকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। হাইফা শহরেও বিস্ফোরণের চিত্র ধরা পড়েছে এবং ইসরায়েলি ফায়ার ও রেসকিউ সার্ভিস সেখানকার একটি ভবনে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার কথা স্বীকার করেছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য লোকাল কলের সম্পাদক মেরন র‍্যাপোপোর্ট জানিয়েছেন, ইরানের এমন ক্ষেপণাস্ত্রের বহর দেখে শত্রুপক্ষও হতবাক হয়ে গেছে, কারণ তাদের সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র কার্যত ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।

আল জাজিরাকে র‍্যাপোপোর্ট বলেছেন, যদিও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এটি (ইরানের হামলা) প্রত্যাশিত ছিল বলে চিত্রিত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ইসরায়েলিরা বেশ অবাক যে এত ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কিছু কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতেও সফল হয়েছে এবং কিছু ঘটনা সম্ভবত জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হয়নি।

এর আগে, শনিবার মধ্যরাতেও ইরান যেসব ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে সেগুলোর বেশ কয়েকটি সরাসরি ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হেনেছে। এতে দেশটিতে অন্তত ১০ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।

এই হামলার সূত্রপাত হয় গত শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে, যখন ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হামলা চালায়। দিনভর চলা এই ভয়াবহ হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান জেনারেল হোসাইন সালামিসহ অন্তত ২০ জন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হন। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বাহিনীর নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা করেন।

দায়িত্ব নিয়েই নতুন আইআরজিসি প্রধান ইসরায়েলের উদ্দেশে কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলার জবাবে শিশু হত্যাকারী জায়নবাদী শাসকের জন্য শিগগিরই জাহান্নামের দরজা খুলে যাবে।’ তার এই বার্তার কয়েক ঘণ্টা না যেতেই ইরান ইসরায়েলে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নামে এই অভিযান শুরু করে। এরপর থেকে দুই পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে হামলা-পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, যা ক্রমেই দুই দেশের সংঘাতকে আরও ভয়ংকর রূপ দিচ্ছে।

/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর