মিয়ানমারে গত মার্চের শেষ দিকে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার, তার মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে।
সরকারের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি থাকবে মিয়ানমারে। রোববার দেশটির জান্তা সরকার এ ঘোষণা দিয়েছে। খবর আনাদোলুর।
বিজ্ঞাপন
মিয়ানমারের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল মিয়ানমার ইন্টারন্যাশনাল টিভি রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হওয়া লোকজনদের পুনর্বাসন এবং ভেঙেপড়া অবকাঠামো মেরামতের কাজ এখনও চলছে। এ কারণেই বাড়ানো হয়েছে যুদ্ধবিরতি।
পৃথক এক বিবৃতিতে জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির সময়ে যদি কোনো গোষ্ঠী বেসামরিক লোকজনের ক্ষতি হতে পারে- এমন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, সেক্ষেত্রে তার কঠোর জবাব দেবে সামরিক সরকার।
২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী।
সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক মাস পরেই তৎপর হয়ে ওঠে মিয়ানমারজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন জান্তাবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
বিজ্ঞাপন
সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় তাদের এবং বর্তমানে মিয়ানমারের বিশাল অঞ্চল বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর দখলে।
এই সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে গত ২৮ মার্চ ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ব্যাপক শক্তিশালী জোড়া ভূমিকম্প আঘাত হানে মিয়ানমারে।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ হাজার ৩৫০ জন, আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৬৮০ জন এবং এখনও নিখোঁজ আছেন শত শত। এছাড়া বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
ভূমিকম্পের পর উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য প্রথমে ৫ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল জান্তা। পরে ৬ মে বিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত করা হয়। তারও পরে রোববার (২ জুন) আরেক দফা বাড়ানো হলো যুদ্ধবিরতির মেয়াদ।
-এমএমএস