মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরের মধ্যেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় এক দিনে কমপক্ষে ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি হাসপাতালে বোমা বর্ষণেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
বুধবার (১৪ মে) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
হামলায় উত্তর গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ জন ও দক্ষিণ গাজায় হাসপাতালে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন। হাসপাতালে হামলার কয়েক ঘণ্টা পরই উত্তর গাজায় ওই হামলা চালায় ইসরায়েল।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা তীব্রতর করেছে এবং মধ্যরাত থেকে কমপক্ষে ৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে চিকিৎসকরা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন।
আল জাজিরা বলছে, দক্ষিণ গাজার ইউরোপীয় এবং নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনী বোমা হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩০ জনকে হত্যা করার কয়েক ঘণ্টা পরেই হামলার তীব্রতা বাড়ায় ইসরায়েল। হাসপাতালে হওয়া ওই হামলায় নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসা নিতে আসা একজন সাংবাদিকও রয়েছেন।
এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৫২ হাজার ৯০৮ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৯ হাজার ৭২১ জন।
বিজ্ঞাপন
দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৮০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৭ হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজা যুদ্ধ ও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ সফর শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার শপথ নেওয়ার পর প্রথম মধ্যপ্রাচ্য সফরে সৌদি গিয়ে ইতোমধ্যে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিও করেছেন তিনি, যার মধ্যে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের সমরাস্ত্র বিক্রির। সৌদি সফরে সিরিয়ার ওপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। গাজা যুদ্ধ বন্ধ নিয়েও তার ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে। এরই মধ্যে ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেলেও ইসরায়েলে যাচ্ছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প।

