পাক-ভারত সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে নতুন মোড় এনে বক্তব্য দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। শনিবার (১০ মে) দিবাগত মধ্যরাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই যুদ্ধবিরতিকে পাকিস্তানের জন্য এক ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে অভিহিত করেন। ভাষণে তিনি বিভিন্ন দেশের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান শান্তিকামী রাষ্ট্র, এবং এই পদক্ষেপ কোটি মানুষের মঙ্গলের কথা ভেবেই নেওয়া হয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে পাকিস্তান কেবল সংঘাত এড়ায়নি, বরং একটি নীতিগত অবস্থানকে জোরালোভাবে তুলে ধরেছে বিশ্ববাসীর সামনে।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাবশালী শক্তিগুলোর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে, এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরপেক্ষ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কথাও তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। চীনকেও তিনি অভিহিত করেন ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু’ হিসেবে, যারা সংকটকালে পাশে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া সৌদি আরব, তুরস্ক, কাতার এবং যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশকে ধন্যবাদ জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এই দেশগুলোর সমর্থন এবং কূটনৈতিক ভূমিকার ফলে যুদ্ধবিরতির পথ সুগম হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
ভাষণে শেহবাজ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ভূমিকাও আলাদাভাবে তুলে ধরেন। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী—সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা দেশের নীতিগত অবস্থান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় ভূমিকা রেখেছে।”
ভাষণের শুরুর দিকে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি কেউ আমাদের স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করে, তবে আমরা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করব।” একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে ভারত—সেসবের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন।
বিজ্ঞাপন
তবে, ভাষণে তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাম্প্রতিক অভিযোগ, অর্থাৎ পাকিস্তান বারবার যুদ্ধবিরতির সমঝোতা লঙ্ঘন করছে—এ বিষয়টি নিয়ে কোনো সরাসরি মন্তব্য করেননি।
শেহবাজ বরং গুরুত্ব দেন আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো সমাধানের ওপর। কাশ্মীর ইস্যু এবং পানিবণ্টনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়েও তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই বাস্তবসম্মত সমাধান সম্ভব। সূত্র: বিবিসি
এইউ