সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

১৫ শহরে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহতের দাবি ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ মে ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম

শেয়ার করুন:

pakistan military missile
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র। ফাইল ছবি

পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতের উত্তরের ও পশ্চিমের রাজ্যগুলো বিশেষ করে জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও গুজরাটসহ ১৫টি শহরে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। 

বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার ভোরে এই হামলা চালানো হয়। তবে রাশিয়ার তৈরি শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এস-৪০০ দিয়ে পাকিস্তানের সব ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


ভারতের সরকারি সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার এমন তথ্য জানিয়েছে দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম এনডিটিভি। তবে পাকিস্তানের তরফে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার করে কিছু বলা হয়নি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই হামলার জেরে পাকিস্তানের লাহোরসহ অনেক জায়াগায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারত। লাহোরে চীনের তৈরি একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংসেরও দাবি করেছে নয়াদিল্লি। 

পেহেলগামের হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানের একাধিক কথিত সন্ত্রাসী আস্তানায় ভারতের হামলার একদিন পর ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ভারতের দাবি, এর সমানুপাতিক জবাব দিতেই ড্রোন হামলা চালানো হয়। 

“পাকিস্তানের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় বাহিনী লাহোরসহ একাধিক স্থানে পাকিস্তানের এয়ার ডিফেন্স রাডার ও সিস্টেমকে লক্ষ্য করে তা নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে” সরকারি সূত্রে বলা হয় প্রতিবেদনে।


বিজ্ঞাপন


সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পাকিস্তানের এয়ার ডিফেন্স ধ্বংসে ভারত হারপি (HARPY) ড্রোন ব্যবহার করেছে। আর ভারতের রাশিয়ান-নির্মিত এস-ফোর হান্ড্রেড (S-400) প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে পাকিস্তানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে।

Screenshot_2025-05-08_192502
রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা।

সরকার আরও জানিয়েছে, ধ্বংস হওয়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেগুলো ভারতের পক্ষ থেকে প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হবে।
এদিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেশটির বিভিন্ন স্থানে ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করা হয়েছে। লাহোরে সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোনের আঘাতের চার সেনা আহত ও বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতির কথাও জানানো হয়। তবে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। 

পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ও আইএসপিআরে প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইসরায়েলের তৈরি ভারতের হারোপ মডেলের ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে মোট কয়টি ড্রোন পাঠানো হয়েছিল সেটি উল্লেখ করেননি তিনি।

Screenshot_2025-05-08_192858
ইসরায়েলি তৈরি হারপি কামিকাজি ড্রোন ব্যবহার করে ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

ড্রোনগুলো লাহোর, গুজরানওয়ালা, রাওয়ালপিন্ডি, চকওয়াল, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, করাচি, চোর, মিয়ানো এবং আটক এলাকায় প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ডিজি আইএসপিআর বলেন, একটি ড্রোন আংশিকভাবে লাহোরের কাছে একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, এতে সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই হামলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চার সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া সিন্ধুর মিয়ানো এলাকায় ড্রোন হামলায় একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

এই ধরনের ড্রোন হামলাকে আগ্রাসনের ধারাবাহিকতা বলে উল্লেখ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, ‘পাকিস্তানের আকাশসীমা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় আমাদের বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।’
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের একাধিক জায়াগায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় ভারতীয় বিমান, সেনা ও নৌবাহিনী।

ভারত বলছে, হামলার লক্ষ্যস্থলের মধ্যে ছিল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুরিদকে, যেখানে লস্কর-ই-তৈয়বার সদর দফতর ও প্রশিক্ষণ শিবির ছিল। এছাড়া ধ্বংস করা হয় জৈশ-ই-মোহাম্মদ-এর সদর দপ্তর ও প্রশিক্ষণ ঘাঁটি, যারা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল।

আরও পড়ুন-

ইসরায়েলি ২৫ ড্রোন ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান

বুধবার মধ্যরাতের হামলায় শতাধিক মানুষকে হত্যার দাবি করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। 

ভারতীয় সামরিক সূত্র জানায়, অপারেশন সিঁদুর নামের এই অভিযানে হ্যামার স্মার্ট বোমা থেকে শুরু করে মোট ২৪টি স্ক্যাল্প (SCALP) ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। যেগুলো ঠেকাতে পারেনি পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

Chinese_HQ-9_launcher
চীনের তৈরি এইচ-কিউ-৯ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা ব্যবহার করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

ভারতীয় সেনাবাহিনী জোর দিয়ে বলেছে, এই হামলায় পাকিস্তানি সেনা ঘাঁটিগুলো লক্ষ্যবস্তু ছিল না।

ভারত সরকার জানিয়েছে, পেহালগাম হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান সীমান্তে গোলাবর্ষণ ও মর্টার হামলা বৃদ্ধি করেছে। কুপওয়ারা, বারামুলা, উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার ও রাজৌরি সেক্টরে বর্তমানে মর্টার ও হেভি ক্যালিবার গোলাবর্ষণ চলছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ৫ জন শিশু রয়েছেন। একজন ভারতীয় সেনাও প্রাণ হারিয়েছেন।

ইএ

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর