যুক্তরাষ্ট্রে সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরে অবস্থিত দুর্গম দ্বীপ আলকাট্রাজে ৬০ বছরেরও বেশি সময় আগে বন্ধ হওয়া একটি কুখ্যাত কারাগার নতুন করে চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
১৯৩৪ সালে এই কারাগারটি স্থাপন করা হয়েছিল। পরে ১৯৬৩ সালে সেটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আর এবার কারাগারটি কেবল চালু করাই না, বরং এটিকে আরও বড় করে পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এপি এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
স্থানীয় সময় রোববার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, এক সময় আমেরিকার জনগণকে রক্ষায় দেশটির বিপজ্জনক অপরাধীদের আলকাট্রাজ কারাগারে আটকে রাখা হতো। সেই কারাগারটিই আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকা হিংস্র ও সহিংস অপরাধীদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। এমনকি কিছু কিছু অপরাধী বারবারই সহিংস কার্যকলাপ করে দেশটির ক্ষতি করে আসছেন।
বিজ্ঞাপন
আমি বিচার বিভাগ, ফেডারেল ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সঙ্গে কারাগার ব্যুরোকে একীভূত করে আলকাট্রাজ কারাগারটি ফের চালু ও সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছি। সেখানে আমেরিকার সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও সহিংস অপরাধীদের রাখা হবে।
এ বিষয়ে ফ্লোরিডা থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, কারাগারটির একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এটি আইন ও শৃঙ্খলার প্রতীক।
প্রসঙ্গত, সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরে অবস্থিত আলকাট্রাজ কারাগারটি ৬৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনসের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, ভঙ্গুর অবকাঠামো ও উচ্চব্যয়ের কারণে ১৯৬৩ সালে কারাগারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তান সফরে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দ্বীপে অবস্থিত হওয়ার কারণে এটি পরিচালনার খরচ ছিল অন্য যেকোনও ফেডারেল কারাগারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ।
এছাড়া দ্বীপের অবস্থান, তীব্র স্রোত এবং বরফ শীতল পানির কারণে আলকাট্রাজকে আমেরিকার সবচেয়ে নিরাপদ কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে এ কারাগার থেকে কোনো বন্দির পালানোর রেকর্ডও নেই। এফবিআইয়ের তথ্যমতে, কারাগারটি চালু থাকাকালীন ৩৬ জন আসামি অন্তত ১৪ বার পালানোর চেষ্টা করেও সফল হননি। সবাই কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছেন। এটি বর্তমানে সান ফ্রান্সিসকোর অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ।
অবশ্য ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করেছেন সাবেক হাউস স্পিকার ও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা ন্যান্সি পেলোসিও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ৬০ বছরেরও বেশি সময় আগে আলকাট্রাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটি এখন অত্যন্ত জনপ্রিয় জাতীয় উদ্যান এবং প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ট্রাম্পের প্রস্তাবটি যথোচিত নয়।
-এমএমএস

