পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন বলে ঘোষণা দিয়েছে ভ্যাটিকান। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে ভ্যাটিকান জানিয়েছে, ২১ এপ্রিল ইস্টার সোমবার ৮৮ বছর বয়সে ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্টায় নিজ বাসভবনে মারা যান তিনি।
বিজ্ঞাপন
পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট পদত্যাগ করার পর ২০১৩ সালের মার্চে কার্ডিনাল জর্জ মারিও বার্গোগ্লিও ক্যাথলিক চার্চের নেতৃত্বের জন্য নির্বাচিত হন।
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন যেসব বিশ্বনেতা—
পোপের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো বিশ্ব নেতাদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো। তিনি পোপকে নম্র মানুষ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘নম্রতার মানুষ, সবচেয়ে দুর্বল এবং সবচেয়ে ভঙ্গুর ব্যক্তিদের পাশে থাকা।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে পোপের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এতে বলা হয়েছে, ‘শান্তিতে ঘুমান, পোপ ফ্রান্সিস।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে পোপের সাক্ষাতের একটি ছবি এবং শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে পোপের সাক্ষাতের আরেকটি ছবি সেই পোস্টে প্রকাশ করা হয়েছে।
পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাতের দুইদিন পরই তার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে।’
জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ খ্রিস্টান যারা পোপকে ভালোবাসতেন, তাদের প্রতি আমার হৃদয় কাঁদে।’
এর আগে, গত শুক্রবার রোমে পৌঁছেছিলেন ভ্যান্স। শনিবার ভ্যাটিকান কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেছিলেন তিনি। এরপর পোপের সঙ্গে একটি সংক্ষিপ্ত একান্ত সাক্ষাৎ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট।
ক্যাথলিক চার্চ ও ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের প্রধান খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে ‘গভীরভাবে ব্যথিত’ জানিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক পোপ ফ্রান্সিসকে একজন ‘ভালো, উষ্ণ এবং সংবেদনশীল মানুষ’ হিসেবে স্মরণ করেছেন।
মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি বলেছেন, পোপ ফ্রান্সিস ‘শান্তি, ভালোবাসা এবং করুণার কণ্ঠস্বর ছিলেন।’
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ‘সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ’ মানুষের প্রতি পোপ ফ্রান্সিসের অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। শান্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার এক গভীর দৃষ্টান্ত রেখে গেছে। শান্তিতে থাকুন।’
ডাচ প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কুফ বলেছেন, ‘পোপ ফ্রান্সিস সর্বোপরি জনগণের একজন মানুষ ছিলেন।’
ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ পোপের ‘অসীম সহানুভূতিশীলতা ও করুণার’ প্রশংসা করেছেন।
সুইস প্রেসিডেন্ট কারিন কেলার সাটার বলেছেন, পোপ ফ্রান্সিস একজন "মহান আধ্যাত্মিক নেতা, শান্তির জন্য অক্লান্ত একজন প্রবক্তা ছিলেন।"
স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার জন সুইনি পোপকে ‘শান্তি, সহনশীলতা এবং পুনর্মিলনের জন্য একটি কণ্ঠস্বর’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইন বলেছেন, ‘পোপ তার নম্রতা ও কম ভাগ্যবানদের প্রতি পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে ক্যাথলিক চার্চের বাইরেও লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।’
ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা পোপের হাসির প্রশংসা করে বলেছেন, ‘তার সংক্রামক হাসি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের হৃদয় জয় করেছিল।’
সূত্র: বিবিসি
এমএইচটি

