বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয় জনতা পার্টি—বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা দিলীপ ঘোষ (৬১)। শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে পাঁচটায় নিউ টাউনের বাড়িতে বিজেপি নেত্রী রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে হবেন তিনি।
এদিকে প্রবল রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে ফুলের তোড়া পাঠিয়ে বিয়ের শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের ছাপযুক্ত হলুদ রঙের খাম পৌঁছেছে নিউ টাউনে। তাতে সাদার ওপর কালো ছাপার হরফে দিলীপের নাম এবং ঠিকানা লেখা।
বিজ্ঞাপন
দিলীপের বিয়ে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি তো বটেই, সর্বত্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তার সঙ্গে মমতার রাজনৈতিক মতবিরোধ প্রবল। তা সত্ত্বেও রাজনীতিকে পাশে সরিয়ে সৌজন্যের নজির দেখিয়ে নিউ টাউনে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন মমতা।
বিজেপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দিলীপের বিয়েতে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন যুগলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ গুটি কয়েক মানুষ। সকালে দিলীপের বাড়িতে গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ অন্য নেতারা। বাড়িতে ছিলেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও।
দিলীপের হবু স্ত্রী রিঙ্কু বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী। দলের সূত্রেই তাদের আলাপ। বিয়ের খবর জানাজানি হতেই শুভেচ্ছার ঢল নেমেছে।
সুকান্তের সঙ্গে সকালে দিলীপের বাড়িতে গিয়েছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়, সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিতাভ চক্রবর্তী, সতীশ ধরের মতো নেতারা। দিলীপের জন্য সুকান্ত নিয়ে গিয়েছিলেন ফুলের তোড়া, মিষ্টির বাক্স আর ধুতি-পাঞ্জাবি। বিজেপির অন্য নেতারাও ফুল, মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলেন। কারও কারও হাতে তার পাশাপাশি অন্য উপহারও ছিল। দিলীপ প্রত্যেককে প্রতি-উপহার দিয়েছেন। লকেটকে দিয়েছেন শাড়ি। বাকিদের কাউকে দিয়েছেন পাজামা-পাঞ্জাবির সেট, কাউকে পাঞ্জাবি বানানোর কাপড়। কাউকে দিয়েছেন ধুতি। তারা বিকেলে বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকবেন না।
বিজ্ঞাপন
দিলীপ-রিঙ্কুর মধুচন্দ্রিমার গন্তব্য কোথায়?
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে নির্দিষ্ট করে কোনো জায়গার নাম উল্লেখ করেননি রিঙ্কু। তবে ইঙ্গিত দিয়েছেন, দু’জনে মিলে নির্জন কোনো পাহাড়ি এলাকায় যেতে চান। রিঙ্কুর কথায়, ‘‘কোনো আইসোলেটেড জায়গায় যেতে চাই। কারণ, উনি (দিলীপ) যেখানেই যান, সেখানেই ভিড় জমে যায়।”
গত বছর ষাট পেরিয়েছেন দিলীপ। ঘটনাচক্রে, শনিবারই তাঁর জন্মদিন। তিনি নিজে আড়ম্বরে বিশ্বাসী নন। প্রতি দিনের মতো শনিবারও নিউ টাউনে প্রার্তভ্রমণে বেরোবেন তিনি। সেখানে অনুগামীরা তাঁর জন্মদিন পালন করবেন বলে খবর।
তবে নববধূ সেখানে থাকবেন না। রীতি-আচার মেনে বিয়ের পরের দিন তিনি বাড়িতেই থাকবেন। শনিবার দমদমে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি আছে দিলীপের। সেখানে তিনি যোগ দেবেন। পরে খড়্গপুরেও যাবেন। বিয়ের জন্য দিলীপের রাজনীতির কর্মসূচিতে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।
সুকান্ত নিউ টাউনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে জানান, দিলীপের বিয়েতে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বিয়ের মধ্যে তো অস্বাভাবিক কিছু নেই। রাজনীতিতে যারা থাকেন, সামাজিক জীবনে যারা থাকেন, তাদের সমাজের কাজ এবং রাজনীতির কাজ করতে গিয়ে অনেক দেরি হয়ে যায়। দিলীপদাকে আগামী জীবনের জন্য শুভেচ্ছা।”সূত্র: আনন্দবাজার।
ইএ

