গাজা উপত্যকায় আবারও ইসরায়েলের নতুন হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত ২৩ ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। নতুন এ হামলার ফলে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫১ হাজার।
বুধবার আল-জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর থেকে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বোমাবর্ষণে নতুন এই প্রাণহানি ঘটে। চিকিৎসা সূত্রগুলোও গণমাধ্যমটিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞাপন
গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবারও বড় ধরনের অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার ৩০০ জন।
এর আগে, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। এরপর কিছুদিন তুলনামূলক শান্ত থাকলেও মার্চের মাঝামাঝি থেকে আবারও বোমা হামলা শুরু করে তারা। হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের সুযোগ নিয়েই এই হামলার শুরু বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১৮ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ১৬ হাজারের বেশি মানুষ।
তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো হাজার হাজার নিখোঁজ মানুষ আছেন যাদের অনেককে মৃত বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে। তাদের হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলি সৈন্যদের পাহারায় থাকা তাদের সংগঠনের এক ফিলিস্তিনি বন্দির অবস্থান সম্পর্কে তারা এখন আর কিছু জানে না। ওই এলাকায় ইসরায়েলের সরাসরি বোমাবর্ষণের পর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, দীর্ঘ এই যুদ্ধের ফলে গাজার ৮৫ শতাংশ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। একইসঙ্গে ধ্বংস হয়েছে গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো।
মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। খাবার, পানি, ওষুধ এবং আশ্রয়ের সংকট মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এর আগেও, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া, গাজায় চলমান আগ্রাসনের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে মামলাও চলছে।
এইউ