এবার ইউক্রেনে সরাসরি সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় বসলেন ইউরোপের ২০টি দেশের রাষ্ট্রনেতারা।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বাগ্যুদ্ধ এবং বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার দৃশ্য দেখেছিল গোটা বিশ্ব।
বিজ্ঞাপন
সে সময়ই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সভাপতিত্বে শুক্রবার (২১ মার্চ) লন্ডনে আয়োজিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত আমেরিকার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কার্যকর হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে নজর রাখা হবে।
লন্ডনের নর্থউডে আয়োজিত ওই বৈঠকের পরে স্টার্মার বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন যদি যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত সমঝোতা লঙ্ঘন করেন, তবে তার পরিণতি গুরুতর হবে।
কিন্তু ইউরোপের দেশগুলি কি শেষ পর্যন্ত ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সাহায্য করতে ইউক্রেনে সেনা পাঠাবে? এ প্রশ্নে স্টার্মার জবাব দেন, আমাদের রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সামরিক পরিকল্পনা সঠিক দিশাতেই এগোচ্ছে।
তিনি মনে করিয়ে দেন, চলতি মাসের গোড়াতেই ঋণনীতি শিথিল করে প্রতিরক্ষা খাতে আরো অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করতেই ওই বাড়তি অর্থ খরচ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশই গত তিন বছর ধরে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ভাবে ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য করে এসেছে। ট্রাম্প হাত গুটিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণার পর সেই সহায়তায় আরও গতি আনতে চাইছে ইইউ।
গত ৬ মার্চ ইইউর ২৭টি সদস্যরাষ্ট্র যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ইউরোপের নিরাপত্তা জোরদার করতে ইইউর সদস্যেরা মিলে ১৫ হাজার কোটি ইউরো (প্রায় ১৪ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা) ঋণ নেবে। এর বড় অংশ ব্যয় হবে ইউক্রেনের সামরিক সাহায্যে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে টেলিফোন-আলোচনায় ইউক্রেনের বেসামরিক পরিকাঠামো, জনপদ এবং জ্বালানিক্ষেত্রে আগামী ৩০ দিন হামলা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।
কিন্তু ট্রাম্পের তরফে দেওয়া ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। এর পরই গত বুধবার জেলেনস্কি ফোন করেন ট্রাম্পকে। হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ ডন স্ক্যাভিনো জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে দু’জনের আলোচনা হয়।
আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবে আমেরিকার সঙ্গে রুশ ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার আবহেও ধারাবাহিক ভাবে লড়াই চলছে রাশিয়া-ইউক্রেনের।
এই পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে বিষয়টি নতুন মাত্রা পেল বলে মনে করা হচ্ছে।
-এমএমএস