রোববার, ১৬ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

মার্কিন চাপে অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইউক্রেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৪ এএম

শেয়ার করুন:

loading/img

অব্যাহত মার্কিন চাপে অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। সৌদি আরবে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পর হোয়াইট হাউস এ ঘোষণা দিয়েছে।

তবে, ইউক্রেন প্রথমে ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। এ সময় রাশিয়া যুদ্ধবিরতির সব শর্ত মেনে চললে পরবর্তীতে যা পারস্পরিক সম্মতিতে বাড়ানো যেতে পারে। পরে শর্ত সাপেক্ষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। খবর কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্টের। 


বিজ্ঞাপন


জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন আলোচনার অন্যতম প্রধান সিদ্ধান্ত হিসেবে এই ঘোষণা এসেছে, যেখানে দুই পক্ষ কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের পর শান্তি চুক্তির দিকে একটি সাধারণ পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছিল।

২৮ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর কিয়েভ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে, যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক ও গোয়েন্দা তথ্য সহায়তা বন্ধ করে দেয়।

বৈঠকের পর জেলেনস্কি বলেন, আমেরিকার সঙ্গে জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইউক্রেনের ৩টি দাবি ছিল- আকাশ পথে ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা, দূরপাল্লার ড্রোন হামলা বন্ধ করা, কৃষ্ণসাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজ থেকে হামলা বন্ধ করা এবং বন্দিদের মুক্তি দেওয়া।

আমাদের দাবির সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিদল একমত হয়েছে, এ জন্য আমি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।

জেলেনস্কি আরো বলেন, চুক্তির অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য এবং প্রতিরক্ষা সহায়তা পুনরায় শুরু করতে সম্মত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মার্কিন প্রস্তাব মেনে আমরা অবিলম্বে ৩০ দিনের জন্য সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় রাজি আছি। কেবল ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং বোমা হামলা ও কৃষ্ণসাগন থেকে রুশ হামলা বন্ধ করলেই চলবে না, বরং পুরো ফ্রন্টলাইন জুড়েই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে হবে।

জেলেনস্কি বলেন, কেবল ইউক্রেনকেই চাপ দিলে হবে না, যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধবিরতির সব শর্ত রাশিয়াকেও মেনে চলতে রাজি করাতে হবে।

আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রতি রাশিয়ার অবস্থান স্পষ্ট নয়। মস্কো বারবার বর্তমান ফ্রন্ট লাইনে যুদ্ধ স্থগিত করার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে আসছে, কারণ তাদের বিশ্বাস- যুদ্ধক্ষেত্রে তাদেরই প্রাধান্য রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন কিয়েভকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে অনিচ্ছুক এবং পরিবর্তে ইউরোপকে ইউক্রেনের যুদ্ধ-পরবর্তী স্থিতিশীলতার দায়িত্ব নিতে আহ্বান জানিয়েছে। 

ukrn

মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, প্রস্তাবিত খনিজ চুক্তিটি নিজেই একটি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হিসেবে কাজ করতে পারে।

জেদ্দা বৈঠকের পর বলা হয়েছে, জেলেনস্কি এবং ট্রাম্প উভয়ই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ উন্নয়নের জন্য একটি বিস্তৃত চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন, যাতে ইউক্রেনের অর্থনীতি সম্প্রসারিত হয়, আমেরিকার দেওয়া সহায়তার খরচ মেটানো যায় এবং ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদী সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের জেদ্দা নগরীতে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের মধ্যে আলোচনা শুরু হচ্ছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে ও খনিজ সম্পদ চুক্তির বিষয়ে সেখানে ওই আলোচনা হয়।

মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সেনাপ্রধান, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা।

-এমএমএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর