মিশরের রাজধানী কায়রোতে গত সোমবার (৩ মার্চ) গাজা পুনর্গঠনে আরব লিগের নেতারা জরুরি বৈঠকে বসেন।
এতে মিশরের পরিকল্পনা আমলে নিয়ে একটি খসড়া বিবৃতি দিয়েছে আরব দেশগুলো। মিশরের উদ্যোগে আয়োজিত আরব শীর্ষ সম্মেলনে মিশরের প্রস্তাব গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত এই পরিকল্পনায় সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। খবর দ্য জেরুজালেম পোস্ট ও মিডলইস্ট আইয়ের।
বিজ্ঞাপন
গত ১৫ মাস ধরে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধের ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। হামাস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, গাজায় কোনো বাইরের চাপিয়ে দেওয়া সমাধান তারা গ্রহণ করবে না।
মিশরের পুনর্গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ৫৩ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে মঙ্গলবার রয়টার্সের হাতে আসা একটি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই ১১২-পৃষ্ঠার পরিকল্পনায় গাজার ভূমির পুনর্বিন্যাসের জন্য ম্যাপ, আবাসন প্রকল্প, উদ্যান এবং কমিউনিটি সেন্টারের মতো স্থাপনাগুলোর ডিজাইনসহ রঙিন এআই-উৎপন্ন ছবি রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পরিকল্পনায় একটি বাণিজ্যিক বন্দর, প্রযুক্তি হাব এবং সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কূটনীতিক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গাজার পুনর্গঠনের জন্য মিশরের এই পরিকল্পনা-ই বর্তমানে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার বর্তমান হামাস পরিচালিত সরকারকে সরিয়ে একটি 'গভর্নেন্স অ্যাসিস্ট্যান্স মিশন' সাময়িকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবে, যা মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, যদি হামাস ক্ষমতা হারায়- তাহলে ইসরায়েল গাজার দায়িত্ব নিতে আরব সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণকে বাধা দেবে না। তবে হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা গাজায় কোনো বাইরের প্রশাসন বা বিদেশী বাহিনীর উপস্থিতি বরদাশত করব না।’
মিশরের পরিকল্পনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলিস্তিনিদের গণ-উচ্ছেদের প্রস্তাবকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবকে আরব দেশগুলো, বিশেষ করে মিশর ও জর্ডান তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
তবে গাজা পুনর্গঠনে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন কে করবে, সে বিষয়ে মিশরের পরিকল্পনায় কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। রয়টার্সের দুটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে উপসাগরীয় এবং আরব দেশগুলোকে অন্তত ২০ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করতে হবে।
এটি কার্যকর করতে তেল-সমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশগুলোর যেমন সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।
আমিরাত ইসরায়েলের সুরেসিুর মিলিয়ে হামাসকে একটি হুমকি হিসেবে দেখে এবং গাজার সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ চায়, যেখানে অন্য আরব দেশ ধাপে ধাপে নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
-এমএমএস

