ভারতীয় বংশোদ্ভূত কুখ্যাত লেখক সালমান রুশদির উপর ছুরকাঘাত করে একটি চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ২৭ বছরের হাদি মাতারকে।
মার্কিন আদালতে তার বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনও শাস্তি ঘোষণা করা হয়নি। রোববার (২৩ এপ্রিল) নিউইয়র্কের আদালত হাদির শাস্তি শোনাবে।
বিজ্ঞাপন
যে সব ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাতে ন্যূনতম ৩০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
হাদি মার্কিন অঙ্গরাজ্য নিউজার্সির বাসিন্দা। ২০২২ সালে আমেরিকার একটি অনুষ্ঠানে রুশদির উপর প্রাণঘাতী হামলা চালান তিনি।
মঞ্চে উঠে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপান রুশদিকে। ছুরির আঘাতে মঞ্চেই লুটিয়ে পড়েছিলেন বুকারজয়ী ব্রিটিশ লেখক। বেশ কিছু দিন তাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল।
পরে সুস্থ হয়ে উঠলেও হামলার ফলে একটি চোখ হারিয়েছেন ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর বিতর্কিত লেখক। অকেজো হয়ে গিয়েছে একটি হাতও।
বিজ্ঞাপন
রুশদির উপর হামলাকারী দীর্ঘ দিন আমেরিকার জেলে বন্দি ছিলেন। চলতি মাসে তার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয় নিউইয়র্কের একটি কাউন্টি আদালতে। যেখানে রুশদির উপর হামলা হয়েছিল, তার থেকে এই আদালত খুব বেশি দূরে নয়।
রুশদিকে হামলা, তাকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন হাদি। এ ছাড়া, মঞ্চে সেদিন রুশদির সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন হেনরি রিস। তাকেও আঘাত করেছিলেন এ যুবক। সেই অভিযোগও প্রমাণিত।
ফলে সশস্ত্র হামলার অভিযোগেও হাদিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আমেরিকার আইন অনুযায়ী, এই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ৩০ বছর বা বেশি জেল হতে পারে।
বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন সাক্ষ্য দিয়েছেন রুশদি নিজে। তিনি আদালতে হামলার সেই দিনের ঘটনাবলির বর্ণনা করেছেন।
রুশদি জানান, আচমকা এক যুবককে তার দিকে ছুটে আসতে দেখেন তিনি। তার চোখগুলি ছিল ‘হিংস্র’। প্রথমে রুশদি ভেবেছিলেন, তাকে ঘুষি মারা হয়েছে। পরে বুঝতে পারেন, তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
মোট ১৫ বার তাকে কোপ মারা হয় বলে জানিয়েছেন রুশদি। দু’সপ্তাহ বিচারপ্রক্রিয়া চলার পরে হাদিকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।
১৯৮৮ সালে ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাস লিখেছিলেন রুশদি। বিতর্কিত এই উপন্যাসের জন্য তার বিরুদ্ধে ইরানের ধর্মীয় নেতা ‘মৃত্যু ফতোয়া’ জারি করেছিলেন।
অজস্র বার খুনের হুমকি পেয়েছিলেন রুশদি। হামলার ভয়ে প্রায় ৯ বছর আত্মগোপন করতে হয়েছিল তাকে।
পরে প্রকাশ্যে আসেন, কিন্তু থাকতেন নিরাপত্তার ঘেরাটোপে। সেই উপন্যাস লেখার প্রায় ৩৫ বছর পর আমেরিকার মঞ্চে তার উপর হামলা হয়।
-এমএমএস

