দু'দিনের সফরে হঠাৎ করে রোববার (৫ জানুয়ারি) ভারতে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান।
আগামী ৫-৬ জানুয়ারি দিল্লি সফর করবেন জ্যাক সুলিভান।আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল, বিশেষ করে এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার তার পশ্চিমা মিত্ররা।
বিজ্ঞাপন
সুলিভানের সফরে এই নীতি আরো দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দু’দিনের ভারত সফরে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। দিল্লি আইআইটিতে পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভাতেও যোগ দেবেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
সুলিভানের সফর নিয়ে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অনেক জায়গায় চীনা বাঁধগুলো, বিশেষ করে মেকং অঞ্চলে, পরিবেশ ও জলবায়ু উভয় ক্ষেত্রেই নিম্নধারার দেশগুলোর জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এসব বিষয় ভারতীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। খবর দ্য ইকোনোমিক টাইমস ও আনন্তবাজার পত্রিকার।
ওই কর্মকর্তা নিশ্চিত করে বলেছেন, সফরে দিল্লির উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করবে ওয়াশিংটন। কার্বন নিঃসরণ কমাতে থ্রি গর্জেস ড্যামের মতো এক বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে চীন। নতুন প্রস্তাবিত প্রকল্পটি করা হবে, তিব্বতের সীমানার বাইরে এই ইয়ারলুং ঝাংবো নদীতে।
নদীটি ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত। এটি ভারতের অরুণাচল ও আসাম প্রদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তারপর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
বিজ্ঞাপন
থ্রি গর্জেস ড্যামের চেয়ে এই প্রকল্পের ব্যয়ও অনেক বেশি। কারিগরি খরচসহ সব মিলিয়ে এই প্রকল্পের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রায় ১৪ লাখ লোককে পুনর্বাসন ব্যয়ও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভারত সরকার এরইমধ্যে ঝাংবো নদীর উপর তিব্বতে জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের চীনের পরিকল্পনার বিষয়ে বেইজিংকে তার উদ্বেগের কখা জানিয়েছে।
যদিও চীনা কর্মকর্তারা দাবি করে আসছে, তিব্বতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশ বা নিম্নধারার জল সরবরাহের উপর বড় প্রভাব ফেলবে না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ নিয়ে বলেন, অভিন্ন নদীর ক্ষেত্রে ভাটির দেশেরও কিছু অধিকার আছে। রাজনৈতিক ও বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে সেই অধিকারের কথা বারবার জানানো হয়েছে। সেই অধিকার ও স্বার্থের বিষয়ে ভারতের পর্যবেক্ষণ জারি আছে। সরকার সেইমতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করবে।
চীনের ড্যাম নির্মাণে ভারত ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নালিশ করছে ভারত। একইসঙ্গে চীনকে ঠেকাতে অরুণাচল প্রদেশে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাকে জোরদার করেছে ভারত সরকার।
বলা যায়, উজানে ড্যাম নির্মাণের প্রতিযোগিতায় মেতেছে চীন ও ভারত দু'দেশ। বছরের পর বছর বাংলাদেশের উজানে ড্যাম নির্মাণ করে আছে ভারত।
ভারতের এসব ড্যাম ভাটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। পানির নায্য হিস্যা নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ দিল্লির চোখে পড়ে না।
-এমএমএস