যুক্তরাজ্য সফরে গেলেই ইসরায়েলি যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর ডাউনিং স্ট্রিট এ ইঙ্গিত দিল। খবর বিবিসির।
বিজ্ঞাপন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেছেন, সরকার তার ‘আইনি বাধ্যবাধকতা’ পূরণ করবে।
গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও।
যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের অন্য সদস্যদেশগুলো চুক্তি অনুযায়ী এ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধ্য। এ অবস্থায় নেতানিয়াহু যদি যুক্তরাজ্যে যান, তবে তিনি আটক হবেন কি না, তা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
জবাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, তিনি ‘অনুমান নির্ভর’ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চান না। তবে মুখপাত্র বলেন, ব্রিটিশ সরকার তার আইনি বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে।
যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট অ্যাক্ট ২০০১ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ এ আদালত যদি কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন, তাহলে একজন মনোনীত মন্ত্রী অনুরোধটি একজন উপযুক্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে পাঠান। ওই বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পরোয়ানাটি যুক্তরাজ্যে কার্যকর করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন যে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আইনের অধীন থাকা বাধ্যবাধকতাগুলো সব সময়ই মেনে চলে যুক্তরাজ্য সরকার।
এ প্রক্রিয়ায় কোন মন্ত্রীকে নিযুক্ত করা হবে, সে বিষয় নিশ্চিত করতে পারেননি মুখপাত্র। যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল লর্ড হারমারের কাছ থেকে কোনো আইনি পরামর্শ চাওয়া হয়েছে কি না, সে ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে মুখপাত্র এর জবাব দেননি।
নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ট—দুজনকেই গাজায় ‘ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করায় অভিযুক্ত করেছেন আদালত। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মূলত আদালত গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে খাদ্যসামগ্রী ও মানবিক ত্রাণ সরবরাহে পদ্ধতিগত উপায়ে বাধা দিয়ে চলার ঘটনাকে বুঝিয়েছেন। এর বাইরে আদালত এ দুই নেতাকে ‘হত্যা, নির্যাতন ও অন্যান্য অমানবিক কর্মকাণ্ডে’ যুক্ত থাকায় অভিযুক্ত করেন।
-এমএমএস