মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

নেপালে বিমান নিখোঁজ হলে কেন খুঁজে পাওয়া কঠিন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২২, ০৮:২১ এএম

শেয়ার করুন:

নেপালে বিমান নিখোঁজ হলে কেন খুঁজে পাওয়া কঠিন?

নেপাল বিমান পরিচালনার জন্য কঠিন জায়গা। আর সেটি যদি হয় বর্ষা বা শীতকালে তাহলে সেটি আরও কঠিন হয়ে পড়ে। দেশটিতে নিখোঁজ বা বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের বেশিরভাগই খুঁজে পাওয়া যায় না। শুধু পাহাড়ি পথ নয়, এর পেছনে আরও বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।

রোববার সকালে ২২ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হয়েছে তারা এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। পোখরা-জোমসোম এয়ার রুটটি অত্যন্ত কঠিন। কারণ, এটি অন্নপূর্ণা এবং ধৌলাগিরির মধ্যবর্তী বিশ্বের গভীরতম খাদের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিপজ্জনক বাতাস ও ঘন মেঘ। খারাপ আবহাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রিত ফ্লাইট ইন টেরেইন (CFIT) এর কারণে এই রুটে বেশ কয়েকটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। 


বিজ্ঞাপন


নেপালে বেশিরভাগ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে বর্ষা মৌসুমে। এই সময়ে ফ্লাইটগুলোকে মেঘের আড়ালে ওড়াতে হয়। এতে বিভ্রান্ত হন পাইলটরা। যাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কঠিন ভূখণ্ড, আঁকাবাঁকা রুট ও দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে নিখোঁজ বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে এবং খারাপ আবহাওয়া থাকলে এটি আরও খারাপ হয়।

২০০২ সালে নিখোঁজ হওয়া একটি বিমান আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। মাকালু বেস ক্যাম্প থেকে লুকলা পর্যন্ত পর্বতারোহণ অভিযানের গাইড নিয়ে যাওয়ার হেলিকপ্টারটি প্রায় ২০ বছর আগে ৩১ মে ২০০২ তারিখে নিখোঁজ হয়েছিল।

nepal flight

এশিয়ান এয়ারলাইনস এমআই-১৭ হেলিকপ্টারটিতে একজন রাশিয়ান পাইলটসহ ৮ জন পর্বতারোহণ গাইড এবং দুইজন ক্রু সদস্য ছিলেন। বর্ষাকালে ঘটা এই দুর্ঘটনার পর দুর্গম এলাকায় কয়েক সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধান চালানোর পরও বিমানটি খুঁজে না পাওয়ার পর সন্ধান কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।


বিজ্ঞাপন


মাকালু বরুন ন্যাশনাল পার্কের পাখিবিদ্যা অভিযানের সদস্যরা বিমানটিকে অরুণ উপত্যকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে চক্কর দিতে শোনেন। ধারণা করা হয়, হেলিকপ্টারটি একটি পাহাড়ে আঘাত হানে এবং এর আঘাতে তুষারধসে চাপা পড়ে। যেহেতু হিমালয়ের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া ভূখণ্ড এবং আবহাওয়ার কারণে চ্যালেঞ্জিং। একই কারণে অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকে আরও কঠিন করে তোলে। 

১৯৬২ সালের আগস্টে রয়্যাল নেপাল এয়ারলাইন্স ডিসি-৩ কাঠমান্ডু থেকে দিল্লির দিকে যাওয়া একটি ফ্লাইট বিধ্বস্ত হয়েছিল। এতে আরোহী ছিলেন সেই সময়ে ভারতে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূতসহ চারজন ক্রু এবং ছয়জন যাত্রী।

বিধ্বস্তের দশ দিন পর ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি উদ্ধারকারী বিমান এর অবস্থান শনাক্ত করে। সে সময়ে একটি উদ্ধারকারী বিমানও বিধ্বস্ত হয়।

১৯৯২ সালের জুলাই মাসে থাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারবাস ৩১০ এর একটি ফ্লাইট ব্যাংকক থেকে কাঠমাণ্ডু যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। ১১৩ জনের সবাইকে নিয়ে ল্যাংটাং জাতীয় উদ্যানে বিধ্বস্ত হলেও চারদিনেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। বর্ষাকাল হওয়ায় সন্ধান কার্যক্রম আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এটি নেপালের বিমান চলাচলের ইতিহাসে দ্বিতীয়-ভয়াবহ বিপর্যয়।

এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি বিমান দেশটির দুর্গম অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার পর খারাপ আবহাওয়া, মেঘ, গিরিপথ, পাহাড় ও তুষারের কারণে সন্ধান কার্যক্রম ভয়ানক হয়ে ওঠে। বেশিরভাগ সময়েই এগুলোর আর সন্ধান মেলে না।

সূত্র: নেপাল টাইমস

একে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর