ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন শেষ চলছে ভোটগণনা। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এগিয়ে আছে ২৯০ আসনে এবং ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে আছে ২৩৪ আসনে। ভোটগণনা যতোই এগুচ্ছে ততই ব্যবধান কমাচ্ছে ইন্ডিয়া জোট। খবর এনডিটিভি।
মঙ্গলবার (৪ জুন) বিশ্বের বৃহৎ এই গণতান্ত্রিক নির্বাচন শেষে ভোটগণনা চলমান রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে, ভোট শেষে ভারতের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা যেসব ‘এক্সিট পোল’ বা বুথফেরত জরিপের ফল প্রকাশ করেছে, তার বেশিরভাগ জরিপেই অবশ্য বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে বিপুলভাবে এগিয়ে রাখা হয়েছে।
তবে ভারতে বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস সম্পূর্ণ ভুল হওয়ার বহু দৃষ্টান্ত আছে, যার মধ্যে সবশেষ বড় ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র মাস ছয়েক আগেই। ছত্তিশগড়, রাজস্থান বা মধ্যপ্রদেশে গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রকৃত ফলাফল কোনো বুথফেরত জরিপই অনুমান করতে পারেনি।
আরও পড়ুন
তৃণমূল শিবিরে উল্লাস
এবারও বুথফেরত জরিপ ‘ভুল’ প্রমাণিত হতে যাচ্ছে! জরিপে এনডিএর নিরঙ্কুশ জয়ের সম্ভাবনা দেখা গেলেও বাস্তব চিত্র এখন পুরোপুরি ভিন্ন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
বিজ্ঞাপন
ইন্ডিয়া টুডের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ২টি আসনে জিতেছে এনডিএ এবং ১টি আসনে জয় পেয়েছে ইন্ডিয়া জোট।
টানা ৪৪ দিন ধরে চলা ৭ ধাপের নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভারতের প্রায় ৬৪ কোটি মানুষ। তবে যে বা যারাই জিতুক না কেন, সেখানে ব্যবধান গড়ে দেবে ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য।
আর সেগুলো হলো— পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, বিহার, তেলেঙ্গানা, ওডিশা, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক ও উত্তর প্রদেশ। এছাড়া বিজেপি ভারতের দক্ষিণের অন্যান্য রাজ্যগুলোতে কতটা ভালো করে তারা ওপরও অনেক কিছুই নির্ভর করেছে।
এদিকে, ভোটগণনা শুরুর পর নিজের আসনে প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বারাণসী লোকসভা আসনে এগিয়ে আছেন তিনি। এছাড়া অমিত শাহ, রাহুল গান্ধী ও অখিলেশ যাদবও তাদের নিজ নিজ আসনে প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে আছেন।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোট নেওয়ায় বিকেলের আগেই সারাদেশের নির্বাচনী ফলাফল মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দল বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ একটানা তৃতীয়বার দেশের ক্ষমতায় আসার জন্য লড়ছে। বিজেপির সেই লক্ষ্য সফল হলে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পর নরেন্দ্র মোদিই হবেন প্রথম ব্যক্তি, যিনি পরপর তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গৌরব অর্জন করবেন।
অন্যদিকে, বিরোধী শিবিরের মূল জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতারাও আশাবাদী যে তারা সরকার গড়ার জন্য যে গরিষ্ঠতা দরকার, তা অর্জন করতে পারবেন।
ইন্ডিয়া জোটের সবচেয়ে বড় দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ভোটপর্ব মেটার পর দাবি করেছেন তাদের জোট ২৯৫ বা তার কাছাকাছি আসন পাবে বলে তাদের ধারণা। লোকসভায় নিরঙ্কুশ বিজয় পাওয়ার জন্য দরকার অন্তত ২৭২টি আসন।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ‘এনডিএ’ বা বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বাইরেও অবশ্য বেশ কয়েকটি প্রভাবশালী আঞ্চলিক দল রয়েছে। অর্থাৎ এই দলগুলো ভোটে লড়েছে কোনো জোটের অংশ না হয়েই। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ওড়িশার বিজু জনতা দল, অন্ধ্রের ওয়াই এস আর কংগ্রেস, উত্তরপ্রদেশে বহুজন সমাজ পার্টি প্রভৃতি রাজনৈতিক দল।
ফলে ভারতের ৫৪৩ আসন-বিশিষ্ট লোকসভায় কোন দল বা কোন জোট শেষ পর্যন্ত ঠিক কত আসন পায়, তা নিশ্চিতভাবে জানার জন্য আজ বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
এমএইচটি

