মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মশলায় ক্যান্সারের জীবাণু, ভারতের অস্বীকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৪, ০৪:৪০ পিএম

শেয়ার করুন:

মশলায় ক্যান্সারের জীবাণু, ভারতের অস্বীকার

ভারতের অভ্যন্তরীণ মশলার বাজারের আকার ১ হাজার কোটি ডলার। এছাড়া বিভিন্ন দেশে মশলা রপ্তানি করে প্রতি বছর ৪০০ কোটি ডলার আয় করে দেশটি। 

ভারতীয় মশলার সবচেয়ে বড় তিন ক্রেতা চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ। এছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়েও মশলা রপ্তানি করেন ভারতীয় উদ্যোক্তারা।


বিজ্ঞাপন


সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ বিষয়ক সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুডস অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) পরীক্ষাতে এমডিএইচ এবং এভারেস্টের পণ্যে এথিলিন অক্সাইডের অতিমাত্রায় উপস্থিতি দেখা গেছে। 

এথিলিন অক্সাইড’ নামের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি মানবদেহে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে।

এফডিএ’র একজন মুখপাত্র বলেছেন, ভারতীয় মশলায় ভেজালের অভিযোগ নতুন নয়। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যত মশলা রপ্তানি করেছিল ভারত, সেসবের মধ্যে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ প্যাকেটের মশলায় ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়ার উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছিল। এমডিএইচ এবং এভারেস্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জানানোও হয়েছিল- কিন্তু তারা তা অস্বীকার করেছে। খবর বিবিসির।

বৈশ্বিক বাজারে ভারতীয় যেসব মশলার চাহিদা সবচেয়ে বেশি, সেগুলো হলো- মরিচ-ধনে-হলুদের গুঁড়া, এলাচ এবং মিক্সড মশলা। এসবের বাইরে  হিং, জাফরান, জায়ফল, মৌরি, লবঙ্গ এবং দারুচিনিরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিশ্বজুড়ে। আর বিশ্বে ভারতীয় মশলা রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে দেশটির দুই কোম্পানি- এমডিএইচ এবং এভারেস্ট।


বিজ্ঞাপন


তবে সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে এ দু’কোম্পানির পণ্যের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মশলায় ভেজাল ও ক্ষতিকর উপাদান মেশানোর অভিযোগে অনেক দেশ সরকারিভাবে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বাজারে ভারতীয় মশলা ক্রয়-বিক্রিয়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়ার কথাও বিবেচনা করছে।

গত মাসে সিঙ্গাপুর এবং হংকয়ের সরকারি প্রশাসন নিজেদের অভ্যন্তরীণ বাজারে এমডিএইচ এবং এভারেস্টের তৈরি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ সম্পর্কিত এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসন বলেছে, এ দুই কোম্পানির পণ্যে এথিলিন অক্সাইডের  মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে। মানবদেহে দীর্ঘদিন ধরে এই উপাদানটি প্রবেশ করলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকি থাকে।

সাবেক ভারতীয় অভিনেতা এবং বর্তমানে খাদ্য সংক্রান্ত লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত মাধুর জাফরি তার এক প্রবন্ধে বলেছেন, ‘ভারতীয়দের কাছে মশলা হলো রঙের বাক্সের রঙের মতো। বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে যেমন রঙের ঔজ্জল্য বাড়ানো যায়, ভারতীয়রাও সেভাবে যে কোনো মশলার স্বাদের তারতম্য ঘটানোর কৌশল জানে।’

ব্যাপারটিকে ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, মশলার প্রধান কাজ খাবারের স্বাদ বাড়ানো এবং ভারতীয় ডিশগুলোতে নানাভাবে মশলা ব্যবহার হয়, ফলে স্বাদেরও তারতম্য ঘটে। 

প্রসঙ্গত, ভারতের প্রায় সব খাবরেই মশলা বাধ্যতামূলক। বিপুল পরিমাণ অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং গত বেশ কয়েক বছর ধরে বহির্বিশ্বে তা রপ্তানির কারণে ইতোমধ্যে ‘মশলা উৎপাদনের বৈশ্বিক কেন্দ্র’ তকমা পেয়েছে ভারত। বিশ্বজুড়ে মোট উৎপাদিত মশলার ১২ শতাংশের উৎপাদন করে ভারত এবং প্রায় ১৮০টি দেশে রপ্তানি হয় বিভিন্ন ভারতীয় মশলা।


-এমএমএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর