ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় আলোচনা চলছে। তিন দফায় একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুপক্ষের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চালাচ্ছে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাবের একটি কপি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল-মায়াদিনের হাতে এসেছে।
খসড়া প্রস্তাবে তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এতে বন্দি বা জিম্মি বিনিময় ছাড়াও গাজাসহ এই অঞ্চলে শান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আল-মায়াদিনের প্রতিবেদন অনুসারে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার পূর্বাংশে সরে যাবে এবং ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের দখল করা সীমান্তে উঠে যাবে। এই সময়ে দৈনিক অন্তত আট ঘণ্টা ইসরায়েলের কোনো যুদ্ধ বা পরিবহন বিমান গাজার আকাশসীমায় প্রবেশ করবে না। এছাড়া বন্দি-জিম্মি বিনিময়ের অন্তত ১০ ঘণ্টা আগে থেকে গাজায় কোনো ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান উড়বে না।

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সপ্তম দিনে ইসরায়েলি বাহিনী আরও পূর্ব দিকে উঠে যাবে। একই সময়ে গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা চালু এবং বেসামরিক নাগরিকরা তাদের নিজ বাড়িতে ফেরা শুরু করবে।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে হামাস জীবিত থাকা ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। একজন জিম্মির বিপরীতে ২০ জন করে বন্দি ফিলিস্তিনি নারী বা শিশু মুক্তি পাবে এবং মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েল আর কখনোই গ্রেপ্তার করবে না, সেই নিশ্চয়তাও দিতে হবে। তবে জিম্মি একজন ইসরায়েলি নারী সেনার বিপরীতে ৪০ জন করে ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
খসড়া প্রস্তাব অনুসারে, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং তিনদিন পরপর হামাস তিনজন করে জিম্মি মুক্তি দেবে।
খসড়া প্রস্তাব অনুসারে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপেই গাজার বিধ্বস্ত অবকাঠামো পুনরায় গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু হবে।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ হবে ৪২ দিনের। এই ধাপে মূলতঃ স্থিতাবস্থা নিশ্চিতের পাশাপাশি বিধ্বস্ত গাজাকে গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আয়োজন নিশ্চিত করা হবে।

তৃতীয় ধাপও হবে ৪২ দিনের। এই ধাপে দুপক্ষের হাতে থাকা নিহত যোদ্ধা বা সেনাদের মরদেহ বিনিময় করা হবে। গাজা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা কার্যকর করা শুরু হবে। এই সময় থেকে হামাসসহ ফিলিস্তিনি পক্ষগুলো গাজায় সামরিক অবকাঠামো গড়ে তোলা থেকে বিরত থাকবে।
এছাড়া ফিলিস্তিনি পক্ষগুলো সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য কোনো সরঞ্জাম, কাঁচামাল বা অন্য কোনো উপাদান আমদানি করবে না।

