মিয়ানমারের সামরিক সরকার আরও একটি বড় ধরনের পরাজয়ের সম্মুখীন। তিন বছর আগে ক্ষমতা দখল করা জান্তা বাহিনী এবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ একটি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
কারেন বিদ্রোহী ও কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কয়েক সপ্তাহের হামলায় শেষ পর্যন্ত সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ শহর মায়াওয়াদ্দির নিরাপত্তায় নিয়োজিত মিয়ানমারের শত শত সেনা আত্মসমর্পণে রাজি হয়েছে। শনিবার (৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিজ্ঞাপন
থাইল্যান্ডের সঙ্গে মিয়ানমারের স্থল বাণিজ্যের বেশিরভাগই হয়ে থাকে মায়াওয়াদ্দি শহরের মাধ্যমে। এই কারণে শহরটি কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন ঘোষণা দিয়েছে, মায়াওয়াদ্দি শহরের ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে থাঙ্গানিনাংয়ে অবস্থিত মিয়ানমার সেনা ব্যাটালিয়নের আত্মসমর্পণের প্রস্তাব তারা গ্রহণ করেছে।
এটি মিয়ানমারের জান্তা সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শান রাজ্যের চীন সীমান্তবর্তী বিশাল এলাকা এবং আরাকান রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকেও পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে জান্তা বাহিনী।
এদিকে চলমান এই সংঘাতে হাজারো সেনা হয় ইতিমধ্যে নিহত হয়েছেন বা আত্মসমর্পণ করেছে কিংবা বিরোধী পক্ষে ভিড়েছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে সাধারণ মানুষকে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করছে জান্তা সরকার।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকেই জাতিগত কারেন জনগোষ্ঠীর জন্য স্বশাসনের দাবিতে লড়াই করে আসছে কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন। এই বাহিনী ১৯৯০-এর দশকে সরকারি বাহিনীর হাতে পরাজিত হলেও ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী এবং সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ক্ষমতা দখল করেন। এরপর থেকে একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহ দমনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে জান্তা সরকার।

