সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের নাতি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:০১ পিএম

শেয়ার করুন:

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের নাতি!
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (বামে) ও পিটিআই মনোনীত প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ওমর আইয়ুব। ফাইল ছবি/এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

পাকিস্তানে সহিংসতাপূর্ণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো দল। তাই কারা সরকার গঠন করবে, কে হবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী —এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। এর মধ্যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদে নাম এসেছে স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খানের নাতি ওমর আইয়ুব। তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন, এমন গুঞ্জন ওঠেছে।

তবে এটি স্রেফ গুঞ্জন নয়, এমনটাও হলেও হতে পারে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসেবে ওমর আইয়ুবের নাম ঘোষণা করেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী পিটিআই নেতা আসাদ কায়সার এ কথা জানান।


বিজ্ঞাপন


ওমর আইয়ুবের বাবা গোহর আইয়ুব খান ছিলেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। ১৯৯৭ সালে নওয়াজ শরিফের সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছিলেন গোহর আইয়ুব খান ১৯৯০ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় পরিষদের স্পিকারও ছিলেন।

ওমর আইয়ুব খানও পাকিস্তান মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে ওঠেন। ২০০২ সালে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়িদের (পিএমএল-কিউ) এবং ২০১৪ সালে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) টিকিটে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

সাবেক সামরিক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফের শাসনামলে ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত অর্থ-প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ওমর আইয়ুব।


বিজ্ঞাপন


২০১৫ সালের জুনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এমপি পদ হারান আইয়ুব খানের নাতি। এসময় তার নির্বাচনী এলাকার নির্বাচন বাতিল এবং অকার্যকর বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে (ইসিপি) ওমরের এলাকায় উপ-নির্বাচনেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন শীর্ষ আদালত। তবে ২০১৫ সালের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত ওই উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ওমর আইয়ুব।

ayub

২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে পিটিআই’র একজন প্রার্থীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন ওমর এবং নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছিলেন। সেসময় তার আবেদন গৃহীত হয় এবং সাতটি ভোটকেন্দ্রে পুনঃভোটের আদেশ দেওয়া হয়। এর ফলে ২০১৪ সালে আইয়ুবকে বিজয়ী প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্টই তাকে পদত্যাগে বাধ্য করে।

এর তিন বছর পরে ২০১৮ সালে ইমরান খানের হাত ধরে পিটিআইতে যোগ দেন ওমর। ইমরানের সরকারে তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। প্রথমে বিদ্যুৎমন্ত্রী, এরপর পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী এবং সবশেষ অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন ওমর।

আর এবার সেই পিটিআই থেকেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হচ্ছেন স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খানের নাতি।

৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। দেশটির নির্বাচন কমিশনের ফলাফল অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ১০২ আসন, যাদের মধ্যে অধিকাংশ (৯২ আসন) দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত। আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন) পেয়েছে ৭৩ আসন এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪ আসন।

তাই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরই জোট সরকার গঠনের তৎপরতা শুরু করে দলগুলো। নির্বাচনের পাঁচ দিন পর গত মঙ্গলবার পিএমএল-এন, পিপিপিসহ সমমনা দলগুলো নতুন জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। সূত্র জানিয়েছে, সরকার গঠনের পর ২৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হতে পারে। এটা সামনে রেখে জাতীয় পরিষদ সচিবালয় কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে।

এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর