দুইবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরও হোয়াইট হাউজসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের না জানিয়ে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' আচরণ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। এই কারণে তাকে বরখাস্তের দাবি উঠছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান, লোহিত সাগরে হুথি বিদ্রোহীদের তৎপরতা, তাইওয়ানকে ঘিরে উত্তেজনার মতো একাধিক সংকট সামলাতে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন খোদ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অনুপস্থিতি ওয়াশিংটনে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করছে।
বিজ্ঞাপন
নববর্ষের দিনেই লয়েড অস্টিন জরুরি চিকিৎসার জন্য সামরিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে তার অনুপস্থিতির কথা এমনকি হোয়াইট হাউজও জানত না। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনেক শীর্ষ কর্তাব্যক্তিও সে বিষয়ে অবগত ছিলেন না। অস্টিনের আরেকবার হাসপাতালে যাওয়ার খবরও গোপন রাখা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সংকটের সময়ে এমন 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' আচরণের কারণে অস্টিনকে বরখাস্ত করার দাবি উঠছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, লয়েড অস্টিনকে পদচ্যুত করার কোনো পরিকল্পনা তার নেই। এ প্রসঙ্গে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান দলের নেতাদের দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন তিনি।
পেন্টাগন জানিয়েছে, চার তারকাখচিত সামরিক বাহিনীর সাবেক জেনারেল অস্টিন নিজেও পদত্যাগের কথা ভাবছেন না। হাসপাতাল থেকেও প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। সোমবার অস্টিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানসহ একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
মার্কিন সেনাবাহিনীর 'কমান্ডার-ইন-চিফ' হিসেবে প্রেসিডেন্টের ঠিক পরই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর স্থান। জাতীয় স্তরে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি দেখা দিলে মুহূর্তের মধ্যে তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হতে হবে। পরমাণু অস্ত্র দিয়ে হামলার মতো পরিস্থিতির ক্ষেত্রে তাকে নিরাপদ লাইনের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতালের আইসিইউ বেডে থেকে সেটা করা সম্ভব কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে। অসুস্থতার ক্ষেত্রে লয়েড অস্টিন কিছু দায়িত্ব উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্যাথলিন হিক্সের হাতে তুলে দেওয়া উচিত ছিল বলে সমালোচকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। অথচ হিক্সও সে বিষয়ে কয়েক দিন ধরে কিছুই জানতেন না। ৭০ বছর বয়সি অস্টিনের অসুস্থতা ও শারীরিক সমস্যা সম্পর্কে এখনো কিছু জানানো হয়নি।
এমন রাজনৈতিক বিতর্কের মাঝে অস্টিন নিজের আচরণ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। তিনি নিজের অনুপস্থিতির সময়ে গোপনীয়তা সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্তের দায়িত্ব স্বীকার করেন। জনসাধারণকে ঠিকমতো জানানোর কাজ আরো ভালোভাবে করতে পারতেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি।
একে